রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে ফের চিঠি, সঙ্গে তথ্য-প্রমাণও

প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের (ইসি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আরো একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। বিশিষ্ট ৪২ জন নাগরিকের পক্ষ থেকে এ বছরের গত ১৭ জানুয়ারি চিঠিটি পাঠানো হয় বলে আজ নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। দ্বিতীয় চিঠিতে অভিযোগের বিষয়ে সাক্ষৎ করে জানাতে রাষ্ট্রপতির সুবিধামতো সময় চেয়ে অপেক্ষায় থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

৪২ নাগরিকের পক্ষে চিঠিটি পাঠিয়েছেন তাদের একজন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইসির সাবেক আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। তার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষ থেকে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে একটি চিঠি দেয়া হয়। তাতে গুরুতর নানা অভিযোগ তুলে ধরে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানানো হয়।

রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তার জন্য অভিযোগের তথ্য-প্রমাণসহ আরেকটি চিঠি পাঠানো হয় এ বছরের গত ১৭ জানুয়ারি। আগের আবেদনটির সংযুক্তি হিসেবে পাঠানো এই চিঠিতে একটি টেলিভিশনে প্রচারিত ৭ পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের কপি দেয়া হয়।

নির্বাচন কমিশন ভবন

এ ছাড়া অডিট আপত্তি সংক্রান্ত সংবাদমাধ্যমের কয়েকটি প্রতিবেদনের কপিও পাঠানো হয় দ্বিতীয় চিঠির সঙ্গে। যা সরকারের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) দপ্তর কর্তৃক উত্থাপিত বলে উল্লেখ রয়েছে।

প্রথম চিঠিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ধরনের গুরুতর অসদাচরণে লিপ্ত হয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা। তারা গুরুতর আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মে (অভিশংসনযোগ্য অপরাধ) যুক্ত হয়েছেন, বিভিন্নভাবে আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘনের মাধ্যমে গুরুতর অসদাচরণ করে যাচ্ছেন।

আবেদনে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত ইসির আর্থিক অনিয়মের সংবাদ, ইভিএম কেনা ও ব্যবহারে অনিয়ম, একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অসদাচরণ ও অনিয়ম, কর্মচারী নিয়োগে সিইসির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, নিয়ম ভেঙে ৩ জন ইসির তিনটি গাড়ি ব্যবহারসহ নানা ধরনের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে।

৪২ বিশিষ্টজনের কয়েকজন

এ বিষয়ে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেছিলেন, এসব অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসদাচরণের তদন্ত হওয়া উচিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি ইসিকে অপসারণ করবেন বলে আশা বিশিষ্টজনদের।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছিলেন, এর আগে প্রতিটি ইসি কমবেশি বিতর্কিত হলেও সরাসরি আর্থিক অনিয়মে জড়িত থাকার ঘটনা দেখা যায়নি। তাই এসব অভিযোগ রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও পাঠানোর কথা বলেন তিনি।

অভিযোগগুলো আইনানুগ ও সংবিধান মেনে করা হয়েছে উল্লেখ করে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এর প্রেক্ষিতে স্বেচ্ছা সরে দাঁড়ানো উচিত ইসির।