মন্ত্রী: সুবিধা অনুসারে সেবামূল্য নির্ধারণ হওয়া উচিত

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীতে এলাকা বা জোনভিত্তিক অবকাঠামো নির্মাণ, ভবনের উচ্চতা, রাজস্ব এবং পানি, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য নির্ধারিত হওয়া উচিত।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঢাকা ওয়াসার 'গন্ধবপুর পানি শোধনাগার' পরিদর্শন শেষে আজ শনিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, সমান সুযোগ-সুবিধা নিয়ে উচ্চবিত্ত এলাকায় বসবাসরত মানুষ এবং কম আয়ের মানুষ কেন একই মূল্য পরিশোধ করবে? সব জায়গায় সমান মূল্য নির্ধারিত হওয়ায় এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। সুতরাং উচ্চবিত্ত এলাকার মানুষের রাজস্বের হার এবং ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য বর্ধিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তাজুল ইসলাম।

একই ধরনের রাজস্ব এবং হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণ যৌক্তিক নয় উল্লেখ করে এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন এবং দেশের উন্নয়নে সকলকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান এলজিআরডি মন্ত্রী।

গন্ধবপুর পানি শোধনাগার

প্রকল্পের মেয়াদ এবং ব্যয় বাড়ানো সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে যে, সমস্ত প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে এবং যৌক্তিক কারণ ছাড়া প্রকল্পের ব্যয় না বাড়ানো যাবে না। প্রকল্পে অযথা কালক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাতে কাজ শেষ করা হয়, সেজন্য টাইম লাইন ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। সেই টাইমলাইন অনুযায়ী শেষ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, টেকসই ও মানসম্মত কাজ করতে গিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে। তিনি জানান, ৫-৬ বছর আগে নেওয়া প্রকল্প এখন শুরু করতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই প্রকল্পের খরচ বেড়ে যাবে। কারণ তখনকার দামের সঙ্গে বর্তমান দামের পার্থক্য অনেক। তাছাড়া কম খরচে কাজ করে পুরো টাকাটা নষ্ট করার চেয়ে একটু বেশি টাকা খরচ করে টেকসই কাজ করা উত্তম।

প্রকল্পের কাজ শেষ করতে করোনার মহামারির মধ্যেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরীতে পানি সরবরাহ করতে ওয়াসার এই প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছি।

তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে পানির ভবিষ্যৎ চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে সারাদেশে টেকসই উন্নয়নের পাশাপাশি টেকসই পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়। ঢাকা ও চট্টগ্রামে পানির যে সমস্যা ছিল তা এখন সমাধান হয়েছে। পানির কোনো সমস্যা দেশে থাকবে না।

মন্ত্রী আরো বলেন, সারা পৃথিবীর মতো পানির স্তর নিচে নামার কারণে বাংলাদেশও সার্ফেস ওয়াটারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। গন্ধবপুর পানি শোধানাগার থেকে ঢাকা মহানগরীতে পানি নিতে প্রকল্পের পাশাপাশি ডিস্ট্রিবিউশন লাইনের কাজও একই সঙ্গে চলছে। কাজ শেষ হলেই পানি সরবরাহ শুরু হবে।

এ সময় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইবরাহীম ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এএফডি এবং ইআইবির অর্থায়নে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।