ধূসর তালিকা থেকে মুক্তি মিলছে না পাকিস্তানের!
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) দেশটিকে ‘গ্রে বা ধূসর’ তালিকাভুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগানদাতাদের পর্যবেক্ষক এই সংস্থাটি বার বার হুঁশিয়ার করে জানিয়েছে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে অগ্রগতি না দেখলে তারা পাকিস্তানকে ‘ধূসর’ থেকে ‘কালো’ তালিকাভুক্ত করবে। কিন্তু এফএটিএফের এ সতর্কবার্তাকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না পাকিস্তান।
পাকিস্তানের পতাকা
বলা হচ্ছে, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ঠেকাতে পাকিস্তান ঠিক ততটাই সচেতন যতটা চীন সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানবাধিকার রক্ষায় তৎপর। সহজ কথায় বলতে গেলে, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ঠেকানোর বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে না পাকিস্তান।
বৃহস্পতিবারের এক বৈঠকে প্যারিসভিত্তিক সংস্থা এফএটিএফের সদস্যরা সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে পাকিস্তানের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে। পাকিস্তানকে ধূসর তালিকা থেকে প্রত্যাহার করা হবে নাকি দেশটি কালো তালিকাভুক্ত হবে তা এ বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে আশানুরূপ পারফরমেন্স দেখাতে না পারায় এফএটিএফের কঠোর পদক্ষেপের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে পাকিস্তান। অবস্থান পরিবর্তনের জন্য এর আগেও বিভিন্ন বৈঠকে দেশটিকে বেশকিছু কর্মসূচি দেয়া হয়। কিন্তু সেগুলোর মধ্যে অল্প কয়েকটিই সম্পন্ন করতে পেরেছে পাকিস্তান। সবমিলিয়ে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে পাকিস্তানের অগ্রগতি কতটুকু তা ইতোমধ্যে যাচাই শুরু করে দিয়েছে এফএটিএফ।
এফএটিএফের পর্যবেক্ষণ পাকিস্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এতে দেশটি দারুণভাবে প্রভাবিত হতে পারে। কারণ সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন করার অভিযোগ রয়েছে এমন দেশগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ইনস্টিটিউটগুলো কেমন সম্পর্ক রাখবে তা নির্ভর করছে এফএটিএফের প্রতিবেদনের ওপর। যেসব দেশ এফএটিএফের কালো তালিকাভুক্ত অথবা পাকিস্তানের মতো যারা ‘ধূসর তালিকাভুক্ত’ সে দেশগুলোয় পুঁজি প্রবাহের গতি কখনোই মসৃন হয় না, বিদেশি বিনিয়োগ নানা রকম প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয় এবং সর্বোপরি উচ্চহারে ব্যাংকিং ফি গুনতে হয়। এ অবস্থায় ‘ধূসর তালিকা’ থেকে নিজেদের নাম মোচনের জন্য এফএটিএফকে নানাভাবে প্রভাবিত করতে চাইছে পাকিস্তান।
তবে এ ধরনের কিছু যেন না ঘটে সে জন্য এফএটিএফ এবং সংস্থাটির ভেতরে থাকা নিজেদের মিত্রদের সর্বশক্তি দিয়ে চাপ দিবে সদ্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসা বাইডেন প্রশাসন। তাছাড়া এখন পর্যন্ত পাকিস্তান সন্ত্রাসমূলক কার্যক্রম বন্ধে যতটুকু পদক্ষেপ নিয়েছে তা ‘ধূসর তালিকা’ থেকে উত্তরনের জন্য যথেষ্ট নয়।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত এফএটিএফের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে এখনো পাকিস্তানের মধ্যে যথেষ্ট সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পাকিস্তান যখনই নতুন কিছু নীতিমালা প্রণয়ন করে তখন তা কার্যকর করা নিয়ে তেমন তৎপড়তা দেখা যায় না। এছাড়া নিজেদের ভূখণ্ডের মধ্যে কয়েক ডজন জিহাদি দলকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে, যারা তাদেরও মুখোমুখি হচ্ছে না ইসলামাবাদ।
এছাড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে এতোদিন কথার ফুলঝুড়ি ফুটিয়ে আসছেন। কিন্তু কাজে সফল হননি। তার এই ব্যর্থতার চরম মাশুল গুনতে হয়েছে পাকিস্তানের নির্দোষ মুসলিমদের। এ অবস্থায় এফএটিএফের ‘ধূসর তালিকা’ থেকে পাকিস্তানের নাম বাদ দিলে তা হবে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের জন্য চমৎকার উদযাপনের বিষয়।
পাকিস্তানের এই সন্ত্রাসবাদমূলক কার্যক্রমের জন্য চরম ভোগান্তিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের উদীয়মান কৌশলগত অংশীদার ভারত। এফএটিএফে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা নিয়ে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে প্রশ্ন তুলতে পারে দেশটি।
মূলত ইসলামাবাদ একদিকে সন্ত্রাসবাদমূলক কার্যক্রমে নিন্দা প্রকাশ করে আসছে, কিন্তু অন্যদিকে তাদের প্রতিহত না করার দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য রয়েছে পাকিস্তান সরকারের। অনেকে একে ইসলামাবাদের ‘ডার্ক আর্ট’ বলে অভিহিত করে থাকে। ‘ধূসর তালিকা’ থেকে মুক্তি পেলেও দেশটি এ রীতি থেকে বের হতে পারবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আর এসব কারণে ধারণা করা হচ্ছে, এফএটিএফ শুধু পাকিস্তানকে তাদের ‘ধূসর তালিকা’তেই রেখে দিবে না। বরং সংস্থাটির পক্ষ থেকে ইসলামাবাদকে সতর্কবার্তা দেয়া হবে যে, দ্রুত এবং ব্যাপকহারে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ না করা হলে দেশটিকে শিগগিরই কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
সূত্র: এএনআই
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.