আপনি পড়ছেন

ইমাম গাজালি (রহ.) তার বিখ্যাত গ্রন্থ এহইয়াউল উলুমুদ্দিনে কলবের যতগুলো মারাত্মক অসুখ নিয়ে আলোচনা করেছেন, এর মধ্যে ‘প্রশংসা প্রীতি’ অন্যতম। প্রশংসা কাজের গতিয়ে বাড়িয়ে দেয় এবং মানসিকভাবে চাঙ্গা হতে সাহায্যা করে, এটা বাস্তব ব্যাপার। ইসলাম এ বাস্তবতাকে অস্বীকার করেনি।

islam 4

কিন্তু প্রশংসা, সুনাম, যশ, খ্যাতি যার উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ায়, তার ব্যাপারে ইসলাম কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। বাইরে থেকে মনে হতে পারে, প্রশংসা কুড়াতে গিয়ে মানুষটি তো ভালো কাজই করছে, এতে দোষের কী আছে? গভীর বিশ্লেষণে দেখা যায়, ‘প্রশংসা পাগল’ মানুষটি একসময় প্রশংসার লোভে এমন এমন ভয়ংকর অপরাধ করে বসে যাতে ব্যক্তি, সমাজ এবং রাষ্ট্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। ইসলাম সীমাতিরিক্ত কোনো কিছুই পছন্দ করে না। তাই এ ব্যাপারেও সুস্পষ্ট হেদায়াত দেয়া হয়েছে।

পবিত্র কোরআনে সূরা আলে ইমরানে ১৮৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘যারা নিজের কাজে উৎফুল্ল এবং যা করেনি তার জন্যও প্রশংসার লোভ করে, তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক কঠিন আজাব।’

এ আয়াতে স্পষ্টভাবে আল্লাহ বলেছেন, মানুষ শুরুর দিকে নিজের কাজে নিজেই সন্তুষ্ট ও তুষ্ট হয়ে আত্মপ্রশংসার চোরাবালিতে পা গলিয়ে দেয়। তারপর একপর্যায়ে সে প্রশংসার জন্য এতটাই পাগল হয়ে ওঠে যে, সে করেনি এমন এমন কাজের অবদানও নিজের ঝুলিতে জমা করতে চায়। এ ধরণের মানুষের জন্য আল্লাহ নির্ধারন করে রেখেছেন কঠিন আজাব।

al quran

কোনো মানুষের ভেতর যেন আত্মপ্রশংসা প্রীতি না জন্মে এ জন্য অতি প্রশংসার ব্যাপারে রাসুল (সা.) উম্মতকে কঠিনভাবে তালিম দিয়েছেন। বুখারির বর্ণনায় এসেছে, এক সাহাবি আরেক সাহাবির উচ্ছসিত প্রশংসা করলেন।

এটা শুনে রাসুল (সা.) বললেন, আফসোস! তুমি তো তোমার ভাইয়ের গর্দান কেটে ফেললে। অর্থাৎ, তাকে শেষ করে দিলে। করো অতিরিক্ত প্রশংসা করো না। যদি বলতেই হয়, তাহলে এভাবে বলো, আমি তার ব্যাপারে এই ধারণা পোষণ করি, সত্যিটা আল্লাহই ভালো জানেন।

ইমাম বুখারির লিখিত আল আদাবুল মুফরাদে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কেউ যদি তোমার সামনে প্রশংসা করে, তুমি তার মুখে পাথর ছুড়ে মেরো।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘করো অতিরিক্ত প্রশংসা করা মানে, তাকে মেরে ফেলার সমান।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর