আপনি পড়ছেন

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত একটি বাংলাদেশি পরিবারের ৬ সদস্যের লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ। তারা টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অ্যালেন শহরে বসবাস করতেন। ধারণা করা হচ্ছে, নিজেদের মা, বাবা, বোন ও নানিকে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছেন ওই পরিবারের দুই ছেলে।

six bangladeshi texas usaযুক্তরাষ্ট্রে একই পরিবারের ৬ বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার

স্থানীয় পুলিশ ও গণমাধ্যম জানিয়েছে, ঘটনার আগে দুই ভাই ‘সুইসাইড নোট’ রেখে হত্যার কথা লিখে গেছেন। সেই নোট থেকেই পুলিশ এমন ধারণা করছে। তারা যে হতাশায় ভুগছিলেন, সেটাও ওই সুইসাইড নোট থেকে বোঝা যায়। তবে পুলিশ ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সময় গত রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে পুলিশ ওই নগরীর পাইন ব্লাফ ড্রাইভ এলাকার বাড়িতে গিয়ে লাশগুলো উদ্ধার করে। তবে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে কোনো ফোন কল পায়নি পুলিশ। বরং ওই পরিবারের পরিচিত প্রবাসী বাংলাদেশি ফোন করে সাড়া না পাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে ওই বাড়িতে যায় পুলিশ।

খবরে বলা হয়, পুলিশ ওই বাড়িয়ে গিয়ে ৬ জনের লাশ দেখতে পায়। পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকের গুলিতে ৬ জন মারা গেছে। ওই বাড়ি থেকে একটি বন্দুকও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

যাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন- বাবা তৌহিদুল ইসলাম (৫৪), মা আইরিন ইসলাম (৫৬), বড় ছেলে তানভীর তৌহিদ (২২), ফারহান তৌহিদ ও ফারবিন তৌহিদ (১৯ বছর বয়সী যমজ ভাই-বোন তারা) এবং তানভীর তৌহিদের নানি আলতাফুন্নেসা (৭৭)।

farhan towhid texas usaফারহান তৌহিদ, ছবি- নিউ ইর্য়ক পোস্ট

অ্যালেন পুলিশ জানিয়েছে, তারা মনে করছেন- পরিবারের অন্য চার জনকে হত্যার পর নিজেরা আত্মহত্যা করেছেন দুই ভাই। মানসিক হতাশা থেকে মুক্তি পেতে তারা এই কাজ করেছেন বলেও প্রাথমিকভাবে ধারণা পাওয়া গেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ফারহান তৌহিদ ঘটনার আগে ইনস্টাগ্রামে একটি দীর্ঘ ‘সুইসাইড নোট’ পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, আমি নিজেকে ও আমার পরিবারকে হত্যা করেছি।

allen police department texasঅ্যালেন পুলিশ বিভাগ

নিজেরা আত্মহত্যা করলে পরিবার লজ্জায় পড়বে। তাই লজ্জা ও মানসিক কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে পরিবারের অন্যদের হত্যা করে দুই ভাইয়ের আত্মহত্যার কথা সুইসাইড নোটে উল্লেখ রয়েছে।

পুলিশের বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, মরদেহ উদ্ধারকারী অ্যালেন পুলিশের সার্জেন্ট জন ফেলটিকে বলেছেন, তিনি দীর্ঘ ২১ বছর ধরে শহরটিতে কাজ করছেন। এমন দুঃখজনক ঘটনার মুখোমুখি তিনি এর আগে কখনো হননি। ঘটনাটিকে মর্মান্তিক বলেও উল্লেখ করেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

অ্যালেন পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি তানভীর তৌহিদ আইনসম্মতভাবে আগ্নেয়াস্ত্র কিনেছিলেন।

জানা যায়, তৌহিদুল ইসলাম প্রায় ২২ বছর আগে ডিভি ভিসায় আমেরিকায় পাড়ি জমান। পুনান ঢাকায় জন্ম ও বেড়ে উঠেন তৌহিদুল ইসলাম। আমেরিকায় গিয়ে প্রথমে তথ্যপ্রযুক্তিতে কাজ করেন। তবে সর্বশেষ সিটি ব্যাংকের ভালো পদে কাজ করছিলেন তিনি।