কাল থেকে শুরু হচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার (আইপিএল) লিগের চতুর্দশ আসর। এই আসরে টানা তৃতীয় শিরোপায় চোখ রাখছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। অন্য দিকে ছেড়ে কথা বলবে না দিল্লি ক্যাপিট্যালসও। গত আসরের দুই ফাইনালিস্টসহ আইপিএলের আটটি দল সম্পর্কে এক নজরে জেনে নিন এই লেখায়।

mumbai may win this ipl feels former english captain

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স

সব সময়ের মতো এবারও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স আইপিএলের প্রধান ফেভারিট। বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা টানা তৃতীয়বার আইপিএল শিরোপার জন্য লড়াই করবে। রোহিত শর্মার দলের মূল শক্তি অধিনায়ক নিজে। তার সাথে আছেন কিরন পোলার্ড, কুইনটন ডি ককের মতো তারকারাও। এছাড়া পান্ডে ব্রাদার্সরা আছেন। জাসপ্রিট বুমরা, ইশান কিষানও আছেন। তাদের সঙ্গে ভারতীয় কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকারের ছেলে অর্জুনও আছেন। যদিও অর্জুনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। ঠিক কী করে তিনি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মতো দলে সুযোগ পেলেন— তা আসলেই এক রহস্য। তারপরও তার দিকে কিছুটা নজর থাকবে মুম্বাই সমর্থকদের।

দিল্লি ক্যাপিট্যালস

রিশাব পান্টের অধিনায়কত্বে দিল্লি আইপিএলে কী করে— এই প্রশ্ন সামনে রেখেই দর্শকরা এবার আইপিএল দেখতে বসবেন। নিয়মিত অধিনায়ক শ্রেয়াস আয়ারের অনুপস্থিতিতে দিল্লি স্টিভ স্মিথকে অধিনায়কত্ব দেবে, মোটামুটি এমনই ছিলো ধারণা। কিন্তু দিল্লি ম্যানেজমেন্ট ভরসার হাত রাখছে তরুণ পান্টের কাঁধেই। জাতীয় দলে নিজেকে এর মধ্যেই প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন পান্ট। তার বুদ্ধিমত্তাও এর মধ্যেই প্রমাণিত। স্মিথ, উমেশ যাদব নিঃসন্দেহে দিল্লির আভিজ্ঞতার ঝুলিতে অনেক কিছু যোগ করছেন, সেই সাথে আছেন টম কারেন, স্যাম বিলিংস এবং ক্রিস ওকসের মতো ক্রিকেটাররাও। আছেন শিমরন হেটমায়ার, কাগিসো রাবাদারাও। সব মিলিয়ে দিল্লি এবার মুম্বাই এবং অন্য যারা ফেভারিট আছে, তাদের জন্য এক কঠিন দল হয়ে উঠতে পারে দিল্লি। তাদের অন্যতম ভরসা প্রধান কোচ রিকি পন্টিংও।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু

এবারের নিলামের আগে ব্যাঙ্গালুরু যতো বেশি খেলোয়াড়কে ছেড়ে দিয়েছে, আর কেউ তা দেয়নি। কিন্তু বিরাট কোহলি ও এবি ডি ভিলিয়ার্সকে ঠিকই রেখে দিয়েছে তারা। কারণটা অনুমেয়। গত কয়েক বছরের মতো এবারও নিশ্চিতভাবেই কোহলি ও ভিলিয়ার্সের কাঁধে ভর দিয়েই অধরা শিরোপাটা ধরার স্বপ্ন থাকবে ব্যাঙ্গালুরুর। এ দুজনের সাথে ব্যাঙ্গালুরুর ভরসা হিসেবে থাকবেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। গত আইপিএলে তেমন কিছুই করতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ান এই তারকা। ফলে তাকে বেশ সমালোচনায় পড়তে হয়েছিলো। বোলিংয়ে স্পিনেই বেশি ভরসা করতে হবে কোহলির দলকে। তাদের আছে অ্যাডাম জ্যাম্পা, যুযবেন্দ্র চাহাল, ওয়াশিংটন সুন্দর। এদের মধ্যে ওয়াশিংটনকে তার অলরাউন্ডার সত্তার আরো প্রমাণ নিয়ে হাজির হতে হবে, এবং সেটা হয়ে গেলে ব্যাঙ্গালুরু এবার ভালো কিছুর আশা করতেই পারে। পেস বোলিংয়ে মোহাম্মদ সিরাজ স্লগ ওভারে দারুণ কার্যকর হতে পারেন, এ ছাড়া নভদিপ সাইনিও আছেন।

চেন্নাই সুপার কিংস

নিষেধাজ্ঞার কারণে যে দুই মৌসুমে চেন্নাই আইপিএল খেলতে পারেনি— সে দুটি বাদ দিলে গত বছর তারা সবচেয়ে বাজে সময় পার করেছে। সুতরাং মোহেন্দ্র সিং ধোনির দলের জন্য এই আইপিএল ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ। এই সুযোগে তারা অবশ্য ধোনির কাছ থেকে আর বেশি কিছু আশা করতে পারছেন না। কারণ ধোনি বা সুরেশ রায়নারা বছর দুয়েক আগে যে শক্তি ছিলেন, স্বভাবতই এখন আর তা নেই। তাদের তাই তরুণদের উপরই বেশি ভরসা করার কথা। যে তরুণদের দিকনির্দেশক হিসেবেই থাকবেন ধোনি ও রায়না। এই মৌসুমে তারা মঈন আলিকে নিয়েছে। ইংল্যান্ডের এই অলরাউন্ডার অবশ্যই চেন্নাইয়ের সফলতার প্রধানতম রূপকার হয়ে উঠতে পারেন। তারা এ বছর চেতেশ্বর পূজারাকেও নিয়েছে। আইপিএলে তিনি সব মিলিয়ে ৩০টি ম্যাচ খেলেছেন, সেখানেও তার বলার মতো খুব বেশি কীর্তি নেই। স্যাম কারেন হয়ে উঠতে পারেন চেন্নাইয়ের তুরুপের তাস।

পাঞ্জাব কিংস

সর্বশেষ দুটি মৌসুমে টেবিলের মাঝামাঝি থেকে আইপিএল শেষ করেছিলো পাঞ্জাব। তাদের এবারের দলকেও মোটামুটি সে রকমই মনে হচ্ছে। যদিও ডেভিড মালানের অন্তর্ভুক্তি তাদের মধ্যে নতুন কিছু করার তাড়না যোগ করতে পারে। টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে মালান এখন এক নম্বরে আছেন। তার কাছ থেকে তাই আলাদা ও বিশেষ কিছু অবশ্যই আশা করবে পাঞ্জাব ম্যানেজমেন্ট। তবে তাদের বোলিং লাইন কিছুটা শ্রীহীন মনে হচ্ছে— মোহাম্মদ শামি ও অস্ট্রেলিয়ান ঝাই রিচার্ডসন ছাড়া তাদের আর তেমন প্রভাব ফেলার মতো তেমন বোলার দেখা যাচ্ছে না। ব্যাটিংয়ে অবশ্য তারা যথেষ্টই সমীহজাগানিয়া দল। কারণ তাদের আছে ক্রিস গেইল, নিকোলাস পুরান, সাথে আছেন লোকেশ রাহুল এবং শাহরুখ খান। পাঞ্জাবের কোচ অনিল কুম্বলে সম্প্রতি শাহরুখকে পোলার্ডের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি মনে করেন যে স্লগ ওভারের দিকে শাহরুখ পোলার্ডের মতোই বিস্ফোরক হয়ে উঠতে পারেন।

রাজস্থান রয়্যালস

ক্রিস মরিসকে দলে ভিড়িয়ে নিলামের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে রাজস্থান। কিন্তু তাদের এই পদক্ষেপ শেষ পর্যন্ত কতোটা ফল নিয়ে আসতে পারবে, তা দেখতে অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস ও জস বাটলারও আছেন রাজস্থানে। এ ছাড়া এ বছর বাংলাদেশি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান যোগ দিয়েছেন, আছেন ডেভিড মিলার। সব মিলিয়ে রাজস্থানের যথেষ্ট শক্তি আছে। সেই শক্তির আরো ভালো প্রদর্শনী দেখা যেতো যদি জফরা আর্চার ইনজুরিতে না পড়তেন। হাতে আঘাত পেয়ে আইপিএল থেকে ছিটকে গেছেন তিনি। তার ইনজুরির সর্বশেষ অবস্থা মতে, তাকে হয়তো আইপিএলের এই মৌসুমে দেখাই যাবে না। ব্যাটসম্যানরা খুব ভালো করতে পারলে অবশ্য আর্চারের অভাব রাজস্থান অনুভব নাও করতে পারে। তাদের আছে সাঞ্জু স্যামসন, রবিন উথাপ্পা। তারা যদি সামর্থ্যের সর্বোচ্চটুকু ঢেলে দিতে না পারেন, তাহলে এই আইপিএল থেকে রাজস্থানের পাওয়ার থাকবে সামান্যই।

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের পর এবারের আইপিএল শিরোপার অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠতে পারে হায়দরাবাদ। গতবারের তুলনায় তাদের দলে খুব বেশি পরিবর্তন আসলে নেই। বিশেষ করে তাদের বিদেশি সংগ্রহ আইপিএলের সেরা সম্ভবত, হ্যা, তর্ক হতে পারে। ডেভিড ওয়ার্নার, রশিদ খান তো তাদের অটোম্যাটিক চয়েজ— সাথে আছেন জনি বেয়ারস্টো, মোহাম্মদ নবি, জ্যাসন হোল্ডার, এ ছাড়া এ বছর যোগ দিয়েছেন মুজিব উর রহমান। স্থানীয়দের মধ্যে তাদের আছে মানিশ পান্ডে ভুবনেশ্বর কুমার। ডেভিড ওয়ার্নার, রশিদ খান ও মুজিব উর রহমানই এবার হায়দরবাদের মূল শক্তি হয়ে উঠতে পারেন।

কলকাতা নাইট রাইডার্স

২০১২ ও ২০১৪ সালের আইপিএল চ্যাম্পিয়নরা সব সময় এমন একটি দল নিয়ে হাজির হয়— যাদেরকে আসলে ফেলে দেওয়া যায় না, আবার চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে একেবারে এক নম্বরেও রাখা যায় না। প্রতি বছরই কলকাতায় বেশ কিছু পরিবর্তন থাকে, তারপরও সম্ভাবনার বিচারে বেশ এগিয়ে থাকে দলটি। এ বছর সাকিব আল হাসান কলকাতায় ফিরেছেন। তার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে নিঃসন্দেহে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে কলকাতাকে সহায়তা করবে। সাকিব থাকা মানেই বোলিংয়ে ও ব্যাটিংয়ে আরো একজন করে খেলোয়াড় নিতে পারা; যা কলকাতাকে তাদের একটি শক্তিশালী কম্বিনেশন সেট করতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া আন্দ্রে রাসেল আছেন। দীর্ঘদিন ধরে নাইটদের ঘরের লোক হয়ে উঠেছেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। আছেন সুনিল নারিন ও ইয়ন মরগান। স্থানীয়দের মধ্যে অভিজ্ঞ হরভাজন সিং, করুন নাইর, শুভমান গিল আছেন। স্থানীয়দের দলে ভেড়ানোর ক্ষেত্রে কলকাতা এবার একটু মার খেয়ে গেছে। সুতরাং তাদের মূল ভরসা আসলে বিদেশিরাই। এ দিক চিন্তা করলে কলকাতার জন্য খুব কঠিন একটি আইপিএল হতে যাচ্ছে এবার।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.