আপনি পড়ছেন

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘শাহরু রাদানাল্লাজি উনজিলা ফিহিল কোরআনি হুদাল্লিান্নাসি ওয়া বায়্যিনাতিম মিনাল হুদা ওয়াল ফোরকান।’ যার অর্থ- রমজান মাসে মানুষের পথ নির্দেশনা এবং সত্য মিথ্যার পার্থকারী পবিত্র কোরআন নাজিল করা হয়েছে। সূরা বাকারাহ, আয়াত ১৮৫।

eid mubarak

পবিত্র কোরআন নাজিল এবং রাসুল (সা.) এর নবুয়ত লাভের কারণে মাহে রমজানের মর্যাদা আল্লাহর কাছে এতই বেড়ে গেছে যে, একটি ফরজ ইবাদতের সওয়াব সত্তর গুণ বেশি বিবেচনা করা হয়। সুন্নত, নফল ইবাদতের ক্ষেত্রেও বেশি সওয়াব কথা উল্লেখ রয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, একবার রাসুল (সা.) রমজানের চাঁদ দেখার পর সাহাবিদের সামনে বড় আবেগঘন ভাষায় ভাষণ দেন।

সেখানে নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মাঝে এক বরকতময়-কল্যাণময় মাস এসেছে। যারা কল্যাণ লাভ করতে চাও দৌড়ে আসো। এ মাসে একটি নফল আমল ফরজের মর্যাদা পায় এবং একটি ফরজ সত্তরটি ফরজের মর্যাদা পায়।’ সুনানে বায়হাকি শরিফ।

তাফসিরে কুরতুবিতে ইমাম কুরতুবি (রহ.) লেখেন, ‘আরবি সিয়াম শব্দের অর্থ বিরত থাকা বা ছেড়ে দেওয়া। বাহ্যিকভাবে সিয়াম পালন করতে হলে বান্দাকে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো মন্দ ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। আর এটাই কোরআনে বলা সিয়াম সাধনার প্রাথমিক স্তর। সর্বোচ্চ স্তর হলো চিরতরে গোনাহ ছেড়ে দেওয়া বা বর্জান করা।’ তাফসিরে কুরতুবি, ৩য় খন্ড, ২৭৩ পৃষ্ঠা।

অবশ্য ফকিহরা বলেছেন, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া-পান করা এবং স্ত্রী সম্ভোগ থেকে বিরত থাকলেই বাহ্যিক সিয়াম পালন হয়ে যাবে। আর প্রকৃত সিয়াম পালন করতে হলে চোখ, হাত, পা, জিহ্বা, মুখ, মন ও অন্তরকেও যাবতীয় পাপ কাজ ও পাপ চিন্তা থেকে বিরত রাখতে হবে।

কোনো কোনো সুফি দার্শনিক বলেন, সারাদিন না খেয়ে থাকার নাম হলো উপবাস, যেমনটা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও করেন। আর নিজেকে সব ধরনের পাপ কাজ ও কুচিন্তা থেকে মুক্ত করে রবের দিকে ফেরা হলো সিয়াম। এমন সিয়ামের দিকে ইঙ্গিত করেই রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা ও গিবত থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারল না তার সারাদিনের উপোস থাকার কোনো প্রয়োজন আল্লাহর কাছে নেই।’ ইমাম ইবনে কাসির, কিতাবুস সিয়াম।

বান্দা যখন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিজেকে গোনাহ থেকে ফিরিয়ে রাখার কঠোর চেষ্টা করবে এবং একমাস এভাবে জোর চেষ্টা অব্যাহত রাখবে, আশা করা যায় মাস শেষে সে মুমিন থেকে মুত্তাকির স্তরে উপনীত হবে। সিয়াম সাধনার মূল টার্গেটও তাই। সূরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘লাআল্লাকুম তাত্তাকুন। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আশা করা যায় তোমরা মুত্তাকি হতে পারবে।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর