আপনি পড়ছেন

অনেকেই আগেভাগে সেহরি খাওয়া শেষ করলেও ফজরের আজান শুরু হলে তড়িঘড়ি করে এক দুই গ্লাস পানি খেয়ে নেন। কেউ কেউ ফজরের আজান শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেহরি খেতে থাকেন। কেউ কেউ আছেন খাওয়ার মধ্যেই আজান শুনে তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করেন।

know the reasons for breaking fast

ঠিক আজানের সময় সেহরি খেলে কি রোজা হবে- অনেকের মনেই এ প্রশ্ন জাগে। আসুন জেনে নিই এ ব্যাপারে ইসলাম কী সমাধান দিয়েছে?

প্রথমত মনে রাখতে হবে, সেহরি খাওয়া বন্ধ করার সম্পর্ক আজানের সঙ্গে নয়। রোজার সংজ্ঞায় সব ইসলামি পন্ডিত একবাক্যে বলেছেন, ‘সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকার নাম রোজা।’ এ থেকে বোঝা যায় সেহরি খাওয়া বন্ধ করার বিষয়টি সুবহে সাদিকের সঙ্গে সম্পর্কিত।

যেহেতু সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার পর ফজরের আজান দেওয়া হয় তাই বর্তমান সময়ের অধিকাংশ আলেমদের মতে, আজানের সময় পানি কিংবা কোনো খাবার খেলে রোজা হবে না। ওই দিন রোজা না হলেও সারা দিন কোনো কিছু খাওয়া চলবে না। পরবর্তীতে এ দিনের রোজা আবার কাজা আদায় করতে হবে।

বর্তমান সময়ের আলেমরা একথাও বলেন, যদি নিশ্চিত হওয়া যায়, ঘটনাক্রমে ফজরের আজান সুবহে সাদিকের আগেই দেওয়া হয়েছে তাহলে আজানের সময় পানি বা অন্য কিছু খেলে রোজা ভাঙবে না।

পূর্ববর্তী যুগের বেশিরভাগ আলেমের ফতোয়া এ ব্যাপারে পুরোপুরি বিপরীত। পূর্ববর্তী আলেমদের এক দলের মতে, ঠিক আজান চলাকালীন সময়ে পানি বা কোনো কিছু খেলে রোজা ভাঙবে না। তাদের দলিল এ হাদিস- আবু হওরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুমের ফজরের আজান শুনে আর ওই মুহূর্তে তার হাতে খাবারের প্লেট থাকে সে যেন আজানের কারণে খাবার বন্ধ করবে না বরং পেট ভরে খেয়ে নেবে।’ আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ২৩৪২ এবং মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নম্বর ৫১০।

free arabian nights vector illustration

আরেকদল পূর্ববর্তী আলেমের মতে, সুবহে সাদিক থেকে রোজা শুরু হলেও সুবহে সাদিক সময়টা মোটামুটি দীর্ঘ সময়। সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার পর ভোরের আলো ভালো করে ফোটা পর্যন্ত কমপক্ষে এক-দেড় ঘন্টা সময় বাকি থাকে। এসব আলেমদের মতে, ভোরের আলো ভালো করে না ফোটা পর্যন্ত সেহারি খাওয়া জায়েজ। চাই ফজরের আজান হোক কিংবা জামাত হয়ে যাক না কেনো।

এ দল আলেমের দলিল হলো কোরআনে এ আয়াত, ‘আর পানাহার করো যতক্ষণ না রাতের কালো আধাঁর দূর হয়ে ভোরের সাদা আলো স্পষ্টভাবে দেখা যায়।’ সুরা বাকারাহ, আয়াত ১৮৭।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রথম মতটি সতর্কতা মূলক এবং দ্বিতীয় মতটি প্রশস্ততা মূলক।

বিস্তারিত জানতে- আল কোরআন, সূরা বাকারাহ, আয়াত ১৮৭; বুখারি, হাদিস নম্বর ১৭৯৭; আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ২৩৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নম্বর ৫১০; তাফসিরে তাবারি, ৩য় খন্ড ২৫৫-২৬১ পৃষ্ঠা; তাফসিরে ইবনে কাসির, ২য় খন্ড, ৫২১ পৃষ্ঠা, তাফসিরে মাজহারি, ১ম খন্ড ৩৮৩ পৃষ্ঠা; তামামুল মিন্নাহ, ৪১৭-৪১৮ পৃষ্ঠা, আলোকিত ভোরের প্রত্যাশা, ৪৮-৫১ পৃষ্ঠা।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর