আপনি পড়ছেন

প্রায় এক দশকের চেষ্টায় পাকিস্তানে আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করতে পেরেছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনী। কিন্তু মৃত্যুর এক দশক পরও ‘ইসলামিক যোদ্ধারা’ তাকে ঘিরেই সক্রিয়, এমনকি গত বছর তাদের মেরুকরণে আমূল পরিবর্তনও এসেছে।

laden h

এএফপি বলছে, বিশ্বে গত পাঁচ বছরে ‘ইসলামিক যোদ্ধাদের’ চরিত্র অনেকটা বদলালেও বেশিরভাগ গোষ্ঠী আদর্শিক অবস্থান থেকে লাদেনকে মানছেন। অথচ লাদেনের লাশ নিয়ে গোষ্ঠীগুলোর রাজনীতি ঠেকাতে কবর না দিয়ে আরব সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

আজ পর্যন্ত লাদেনের লাশের সন্ধান কেউ পায়নি। তারপরও ‘ইসলামিক যোদ্ধাদের’ প্রেরণার প্রতীক হয়ে আছেন তিনি। সৌদি নাগরিক লাদেন তার ‘প্রোপাগান্ডার’ গুরুত্ব বুঝতে পেরেই দীর্ঘমেয়াদি ক্যারিশমেটিক চরিত্র দাঁড় করান। সরাসরি কোনো লড়াইয়ে তাকে দেখা না গেলেও ভিডিওতে বক্তব্য দেওয়ার সময় লাদেনের পাশে অ্যাসল্ট রাইফেল থাকতো।

বিশ্লেষকরা বলছেন, অ্যাসল্ট রাইফেল পাশে রাখা লাদেনের ভিডিওচিত্র থেকে নেওয়া ছবি এখনো ‘প্রোপাগান্ডার’ অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে গোষ্ঠীগুলো। আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের ক্রিটিক্যাল থ্রেটস প্রকল্পের উপদেষ্টা ক্যাথরিন জিমারম্যান বলেন, ‘অনুসারীদের উদ্দেশে ওসামা বিন লাদেন খুব সাবধানতার সঙ্গে তার ব্যক্তিত্বকে কাজে লাগিয়েছেন। ধর্মপ্রাণ মুসলিমের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, সঙ্গে ক্যামোফ্লেজ জ্যাকেট ও পাশে রাখা অ্যাসল্ট রাইফেল; এমনভাবে কাজ করেছে যেন এই ছবি দেখলে মনে হবে তিনি আধ্যাত্মিক ও সামরিক নেতা।’

osama bin laden 2

যোদ্ধাদের দলে ভেড়াতে লাদেনের এই ছবির প্রকল্প সফল দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সৌফান সেন্টারের গবেষণা পরিচালক কলিন ক্লার্ক বলেন, ‘লাদেনের ওই ছবি গণহারে বিলি করে ব্যাপক সফলতা পায় গোষ্ঠীগুলো। লাদেন বেঁচে থাকতে অন্য অনেক ইসলামিক দলের সঙ্গে তার মতপার্থক্য থাকলেও, মৃত্যুর পর অনেক দলই তার ছবি ব্যবহার করতে শুরু করে।’

ওয়াশিংটনের দাবি, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লাদেনের নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। এরপর কথিত ইসলামিস্টদের দমনের নামে একাধিক মুসলিম দেশে হামলা চালায় পশ্চিমারা, এর জন্য কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেছে। কিন্তু বিগত দুই দশকে তার ফল হয়েছে উল্টো। অর্থাৎ আগের তুলনায় ‘ইসলামিস্টরা’ এখন বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী ১১ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তান থেকে কথিত সেই সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়ে সেনা প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও এর আগে একাধিকবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে এমন প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, কিন্তু তার বাস্তবতা দেখেনি বিশ্ব।

laden 3

লাদেনের মৃত্যুর পর বিশ্বে কার্যত আল-কায়েদার প্রতিপত্তি কমতে থাকে। তাদের স্থান দখল করে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। বিশ্বে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আইএস কয়েক বছর আগেও ইরাক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করে কথিত খিলাফত ঘোষণা করেছিল।

জিহাদোলজি ওয়েবসাইটের পরিচালক ও গবেষক অ্যারন জেলিন বলেন, ‘লাদেনের মৃত্যুর আগে ইসলামিক স্টেট ও আল-কায়েদার মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু ইসলামিক স্টেটের সদস্যদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। কিছুক্ষেত্রে আইএস নিজেদের লাদেনের যোগ্য উত্তরসূরি মনে করে। লাদেনের তুলনায় আয়মান আল জাওয়াহিরি বৈশ্বিক বিচারে অনেক নিষ্প্রভ।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিহাদিদের নিজেদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে হামলাসহ লাদেনের অনেক কৌশল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তারপরও নিজেদের প্রয়োজনেই লাদেনকে মিথ বানিয়ে নিয়েছে তারা।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.