নিষেধাজ্ঞায়ও গতিশীল ইরানের আমদানি-রফতানি

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরও ইরানের অর্থনীতি নিজস্ব গতিতে চলছে। গতিশীল রয়েছে পণ্য রফতানি ও আমদানি। গত বছরে দেশটির মাত্র একটি বন্দর হয়েই ৪০ হাজার টন পণ্য রফতানি হয়েছে। ২১ মার্চ ২০২০-এ শুরু হওয়া ইরানি অর্থবছরে দেশটির কেশম দ্বীপের কাস্টমসের মাধ্যমে ১০১ মিলিয়ন ডলার মূল্যের এ পণ্য রফতানি হয়। হরমোজগান প্রদেশের কেশম কাস্টমস অফিসের মহাপরিচালক আলি হুমায়ুনি এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, এ সময় কেশম দ্বীপের কাস্টমসের মাধ্যমে ৩১ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ২০ হাজার ৪৪৬ টন পণ্য আমদানি করা হয়।

কেশম শুল্ক অফিসের মহাপরিচালক আরও জানান, এ পণ্যগুলি মূলত ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, চীন, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং জার্মানিতে রফতানি করা হয়।

তিনি জানান, পারস্য উপসাগর এবং ওমান সাগরের উপকূলে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত কেশম দ্বীপ, স্পেশাল পার্সিয়ান ইকনোমিক জোন, বন্দর-ই-জাস্ক এবং ইরানের মোকরান উপকূলে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প উন্নয়নের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

মোকরান উপকূলীয় অঞ্চলটি ইরানের সিস্তান প্রদেশ এবং দক্ষিণপূর্ব ইরানের বালুচেস্তানে অবস্থিত। এটি পাকিস্তানের করাচি বন্দরের কাছে ওমান উপসাগরজুড়ে এক হাজার কিলোমিটার ব্যাপী প্রসারিত।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসার অজুহাতে ইরানের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ইরানের মোটরযান খাতসহ স্বর্ণ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের রফতানি বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

যেসব ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, সেগুলো হলো, ইরান সরকারের মার্কিন ডলার কেনা বা সংগ্রহ; স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু কেনাবেচা; গ্রাফাইট, অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল, কয়লা ও শিল্প কারখানার কাজে ব্যবহৃত সফটওয়্যারের আমদানি; ইরানি রিয়াল সংক্রান্ত লেনদেন; ইরানের সার্বভৌম ঋণ খাত; মোটরযান খাত; বন্দর কার্যক্রম; জ্বালানি, জাহাজ ও জাহাজ নির্মাণসংক্রান্ত খাত; পেট্রোলিয়াম বা জ্বালানি তেল সংক্রান্ত লেনদেন এবং ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বিদেশি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক লেনদেন।

এ নিষেধাজ্ঞার পর ইরানের সঙ্গে বহির্বিশে^র বাণিজ্য কমলেও ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী দেশগুলো বিশেষত চীন ও রাশিয়া ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য গতিশীল করে। এ কারণে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইরানের অর্থনীতিকে তেমন ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারেনি।