গণপরিবহন চালু নিয়ে উল্টো পথে হাঁটছে সরকার!

করোনার প্রকোপ ঠেকাতে দেশে তৃতীয় দফার লকডাউন চলছে। এর মধ্যেই ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হয়েছে সবকিছু। বাকি থাকা গণপরিবহনও খুলে দেওয়ার সক্রিয় চিন্তাভাবনা করছে সরকার। ওদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতদিনের লকডাউনে পরিস্থিতির যতটা উন্নতি হয়েছে, গণপরিবহন চালু হলে তা আবারও অবনতির দিকে যাবে। বিষয়টি নিয়ে সরকার উল্টো পথে হাঁটছে।

তৃতীয় দফার লকডাউন শেষে গণপরিবহন চালুর ‘চিন্তা-ভাবনার’ কথা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এক্ষেত্রে তিনি স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবতা আসলে ভিন্ন কথা বলছে। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা যে শেষ পর্যন্ত একটা প্রায় অসম্ভব বিষয় হয়ে দাঁড়ায় সেটা দেখা গেছে ভাইরাসটির প্রথম ঢেউয়ের সংক্রমণের সময়।

সেই সময় গণপরিবহন কিছুদিন বন্ধ রাখার পর অর্ধেক যাত্রী এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে চালু করা হয়েছিল। দেখা গেছে, কয়েকদিন চলার পর আপনাআপনিই আগের অবস্থায় ফিরে যায়। বাস্তবতা হলো, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের লাখ লাখ গণপরিবহনের ওপর মনিটরিং করাও সম্ভব নয়।

তাছাড়া এখন ঈদের আগে গণপরিবহন খুলে দিলে পরিস্থিতি যা দাঁড়াবে, তা নিয়েও শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা।

আইইডিসিআর-এর উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন মনে করেন, সংক্রমণ শূন্যের কোটায় নামাতে প্রয়োজনে অফিসসহ সবকিছু বন্ধ করে দেয়া উচিত। গণপরিবহন তো চালু করা কোনোভাবেই উচিত হবে না। সংক্রমণের হার এখনো ১০ শতাংশে থাকায় সেটি এখনই সম্ভব নয়।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলছেন, লকডাউনের জন্য করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ কিছুটা কমেছে। এটা ভেবে যখন কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি, তখনই গণপরিবহন চালুর কথা হচ্ছে। আমি মনে করি, এখন ঈদের আগে গণপরিবহন চালু তো নয়ই, বরং জরুরি পরিবহন ছাড়া সব পরিবহনও বন্ধ করে দেয়া উচিত।

গতকাল শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) গণপরিবহন চালুর দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে তারা জানিয়েছে, রোববার (২ মে) এই দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ করা হবে। তাদের এই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা না যেতেই গণপরিবহন চালুর চিন্তাভাবনার কথা জানিয়ে দিলেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।