আপনি পড়ছেন

বাংলাদেশের কোনো কোনো মসজিদে অতি যত্নের সঙ্গে লেখা থাকে, ‘মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা হরাম’। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, মসজিদ আল্লাহর ঘর। এখানে আখিরাতের চর্চা হয়। দুনিয়াবি চিন্তা চেতনা ও বেচাকেনার হাটের মতো শোরগোল করা নিষেধ। এখানে দুটি বিষয়। মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা, আর অযথা শোরগোল করা। এ ব্যাপারে শরিয়তের নির্দেশনা কী আসুন জেনে নিই।

islamicফাইল ছবি

হাদিস শরিফে কেয়ামতের আলামত হিসেবে মসজিদে অনর্থক শোরগোলের কথা বলা হয়েছে। এটা ইবাদতখানা। এখানে ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশ বজায় থাকা চাই। তাই মসজিদে অহেতুক হট্টগোল সৃষ্টি করা শরিয়তের আলোকে নিষেধ।

এবার রইল দুনিয়াবি কথা বলা। দুনিয়াবি কথা বলারও দুটো দিক আছে। একটি সাধারণ পারিবারিক ও বন্ধুত্বের আলাপ-আলোচনা। আরেকটি হলো গোনাহের আলোচনা। মসজিদের দুনিয়াবি কথা বলা হারাম বলতে দ্বিতীয় ধরনের কথাবার্তাকে বোঝানো হয়েছে।

beautiful mosqueএকটি মসজিদ

লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হলো, গালিগালাজ, গিবত, লোভ, অন্যায় কথা মসজিদে যেমন হারাম, তেমনি মসজিদের বাইরেও হরাম। একইভাবে ভদ্রতাসূচক শালীন সব ধরনের কথাবার্তা বাইরে যেমন জায়েজ, মসজিদেও জায়েজ।

ইসলামের ইবাদতখানা ‘মসজিদ’ শুধু ইবাদতখানাই নয়, এটি সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবেও রাসুল (স.) এর সময় থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রাসুল (স.) সাহাবিদের নিয়ে মসজিদে গল্প করতেন, হাসির কথা বলতেন, বিচার করতেন, সফরসূচি ঠিক করতেন।

এমন হাদিসও আছে, রাসুল (স.) এবং সাহাবিদের কেউ কেউ যখন প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত হয়ে পড়তেন, তখন মসজিদে চলে আসতেন। এর একটা উদ্দেশ্য ছিল- কেউ মসজিদে খাবার নিয়ে আসে কি না কিংবা খাবারের দাওয়াত দেয় কি না এ জন্য।

তাই মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা হারাম কথাটি এভাবে না বলে, মসজিদে অশ্লীল ও অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকি এবং মসজিদের বাইরেও এসব না করি- এভাবে বলাই শ্রেয়।

বিস্তারিত দেখুন- বুখারি শরিফ, ১ম খন্ড, ৬৩ পৃষ্ঠা; রদ্দুল মুহতার, ১ম খন্ড, ৬৬২ পৃষ্ঠা; ইতহাফু সাদাতুল মুত্তাকিন, ৩য় খন্ড, ৩১ পৃষ্ঠা।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর