নুর-রাশেদের বিরোধ ‘মীমাংসা’

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের মধ্যকার বিরোধ ‘মিটে গেছে’ বলে তারা উভয়ই দাবি করেছেন। দুই জনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রোববার সন্ধ্যায় দেওয়া পৃথক পোস্টে এমন দাবি করেছেন। একই সঙ্গে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে কাউন্সিল করে নতুন কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়েছে।

রাশেদ খানের ঘাড়ে হাত রেখে নুরুল হক নুর, ফাইল ছবি

নুরুল হক নুর তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের এক যৌথ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন এবং যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনকে স্বপদে বহাল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং আগামী ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুব অধিকার পরিষদের কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাউন্সিল করার মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বাছাই ও নতুন কমিটি গঠন করতে স্ব-স্ব সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, রাশেদ খাঁন তার দেওয়া ফেসবুক পোস্টে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নুর ও আমার মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, আলোচনার মাধ্যমে সেটার সুন্দর সমাধান হয়েছে। আগামীতে চলার পথে আরো বেশি সতর্ক থাকব। কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরুর দিন থেকেই নুর ও আমার মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। ভবিষ্যতেও সেটা ধরে রেখে নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।

এর আগে নুরুল হক নুর মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন ও মো. সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে ‘সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ অভিযোগ আনেন এবং সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। তবে নুরের এই আচরণকে ‘চরম অসাংগঠনিক কার্যকলাপ’ বলে আখ্যায়িত করেন রাশেদ খাঁন। একই সঙ্গে নুরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

দুই নেতার এমন পাল্টাপাল্টি ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এক প্রকার ভাঙনের মুখে পড়ে ছাত্র যুব শ্রমিক অধিকার পরিষদ। তবে রোববার সারাদিন আলোচনার পর সন্ধ্যায় দুই জনই এ সমস্যার ‘মীমাংসা’ হয়েছে বলে জানান। প্রসঙ্গত, এক সময় সরকারি চাকরির কোটা সংরক্ষণের বিরোধিতায় গড়ে উঠেছিল সংগঠনটি। পরবর্তীতে তা রাজনৈতিক রূপ পায়। বিগত কয়েক বছরে সংগঠনটির অনেক নেতাকর্মী হামলা-মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন।

সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, একটা অভিযোগের ভিত্তিতে রাশেদ খানের বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা একটা প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা তিনি না মেনে উল্টো প্রেস রিলিজ দেন। যা সংগঠনের সমন্বিত সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করার শামিল। যাহোক, তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেছেন এবং সমন্বিত সভায় সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি আমাদের একজন ত্যাগী ও সংগ্রামী সহযোদ্ধা। এ জন্য আমরাও তার প্রতি সদয় হয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছি। ছাত্র অধিকার পরিষদ ও যুব অধিকার পরিষদের কাউন্সিলের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের পর চলতি বছরেই একটি রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেওয়াও কথাও জানান নুর।