আপনি পড়ছেন

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় তালেবান ও আফগান সরকারের আলোচনা নিয়ে অনেকে আশা প্রকাশ করেন এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে অতীত ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষা পাবে। তবে বিষয়টি নিয়ে অনেকে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিদেশি সেনাদের প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। তবে সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে তা নিয়ে জল্পনা চলছে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে কিছু একটা ঘটতে চলেছে বলে অনুমান করছেন ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিশেষজ্ঞরা।

us taliban peace talksযুক্তরাষ্ট্রের সাথে শান্তি আলোচনায় তালিবান নেতারা

আফগানিস্তানের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে কয়েক শতাব্দী ধরে এই উদ্বেগ রয়েছে। সিন্ধু সভ্যতার অংশ হিসেবে এখানে আলেকজান্ডারের আক্রমণ ও গ্রিকো-বাক্ট্রিয়ান, কুশানস, সাফারি, গজনভি, তৈমুর এবং মুঘলসহ বেশ কয়েকটি সাম্রাজ্য এই অঞ্চল থেকে শুরু হয়েছিল।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিছু সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিশারদ আশা প্রকাশ করেছেন। আবার কেউ কেউ মার্কিন ও ইউরোপীয় সেনা প্রত্যাহারের ফলে কী ঘটতে চলেছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যারা এই জাতির অনন্য বৈচিত্র্যপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দেখভালের কাজ করেছেন তাদের পক্ষ থেকে যে ভয় রয়েছে তা ভিত্তিহীন নয়। তাদের এখনো মনে আছে, অন্যদের মতো ২০০১ সালে তালেবানরা পৃথিবীর বৃহত্তম বামিয়ান বুদ্ধ মূর্তি ধ্বংস করেছিল।

will the taliban keep their promises

তালেবান কাবুলের জাতীয় জাদুঘরটি ভাঙচুর করেছিল এবং প্রাচীন স্থান থেকে প্রাপ্ত প্রাচীন জিনিসপত্র লুট করেছিল। অতীত ধ্বংসাবশেষের প্রতি তাদের মনোভাব, বিশেষত প্রাক-ইসলামিক যুগের বিষয়গুলোর কারণে তাদেরকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেছিল।

তবে এই সময় তালেবান আফগানিস্তানের ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এক বিবৃতিতে তাদের অনুসারীদের তালেবান সতর্ক করে দিয়েছে ‘অতীত ইতিহাস রক্ষা, পর্যবেক্ষণ ও সংরক্ষণ’ করতে। এ ছাড়া ‘অবৈধভাবে খনন ও ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো রক্ষার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু সময়ই বলে দিবে এই প্রুতিশ্রুতি তাদের কেবল কৌশল ছিল কি না। মজার বিষয় হচ্ছ তারা ‘ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো বাজারে বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে এবং লাভের জন্য সেগুলোর ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে।’

তবে সবাই এই আশার কথাগুলো শেয়ার করেননি। আফগানিস্তানের প্রত্নতত্ত্ব ইনস্টিটিটের নূর আগা নুরি বিষয়টি নিয়ে প্রভাবান্বিত নন। তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কী- আমরা সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ভবিষ্যত সম্পর্কে খুব চিন্তিত ছিলাম যে তালেবানরা ক্ষমতায় আসবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, তালেবানের পূর্বের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে।

কাবুল জাতীয় জাদুঘরের পরিচালক মোহাম্মদ ফাহিম রহিমি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে তালেবানের ওই বিবৃতি স্পষ্ট নয়। আপনি জানেন ২০০১ সালে গৃহযুদ্ধের সময় তালেবান কী করেছিল।’

অনেকে তালেবান ও আফগানিস্তানের মধ্যে আলোচনা নিয়ে আশাবাদী। তারা মনে করেন আফগানিস্তানের অতীত ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষা পাবে।

এআরসিএই’র কাবুল শাখার নসরতউল্লাহ হেওয়াদওয়াল মন্তব্য করেন, ‘এটি একটি দুর্দান্ত এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ। আল কায়দার ওপর দোষারোপ করার পরে ২০০১ সালে তালেবানরা বামিয়ান বুদ্ধদের ধ্বংস করা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিল।’

আফগানিস্তান থেকেই চীনে বৌদ্ধরা ছড়িয়ে পড়ে। এটি সেই জায়গা যেখান থেকে জরথ্রুস্টবাদ, খ্রিস্টীয়, ইহুদি ও হিন্দু ধর্মের বিকাশ ঘটে। তালেবানদের পূর্বের কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিহাস ও প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষণবাদীরা ভয় পাচ্ছেন মার্কিন ও ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের পরই তালেবানের সেই কর্মযজ্ঞ না আবার শুরু হয়ে যায়।

সূত্র: এশিয়ানলাইট

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.