পাকিস্তান: যোদ্ধা সরবরাহের অভিযোগ ঘানি সরকারের ব্যর্থতা

উজবেকিস্তানের তাসখন্দে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। ঘানির অভিযোগ ছিল, আফগানিস্তানে তালেবানের পক্ষে পাকিস্তান ১০ হাজার যোদ্ধা সরবরাহ করছে।

ইমরান খান ও আশরাফ ঘানি

এছাড়া আরেকটি জঘন্য অভিযোগ তোলেন আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট। তার অভিযোগ, বর্ডার ক্রসিং স্পিন বোলডাক দখলে তালেবানকে বিমান সহায়তা দিয়েছে পাকিস্তান। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফগানিস্তানের এসব অভিযোগ চরম অনৈতিক। এই দাবি প্রমাণ করে, পশ্চিমানির্ভর ঘানি সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থ হয়েছে।

দ্য ডনের সম্পাদকীয়তে বলা হচ্ছে, আফগান সরকার তাদের ব্যর্থতা পাকিস্তানের ওপর চাপাতে চায়। ঘানি মূলত ভারতীয় সমর্থন নিয়ে রাজনীতি করছেন। পাকিস্তানের প্রতি বরাবরই তিনি রুষ্ট। সম্প্রতি ঘানির অনুরোধে পাকিস্তানের একটি পিস কনফারেন্সও স্থগিত করা হয়েছে। দোহায় তালেবানের সঙ্গে সংলাপে একটি কোয়ালিশন সরকার গঠনের দাবি জোরালো হচ্ছে।

কাবুলের রাজনীতিকরা বিশ্বাস করে, আফগানে শান্তি ফেরাতে মূল ভূমিকা রাখবে পাকিস্তান। যদিও তালেবানের ব্যাপক উত্থানে শান্তি প্রক্রিয়া ভেস্তে যেতে পারে। ভূরাজনীতি, ঐতিহাসিক যোগসূত্র এবং সাংস্কৃতিক বন্ধনের দিক দিয়ে বিচার করলে পাকিস্তান আফগানিস্তানে যে কোনো ইতিবাচক কার্যক্রমে ভূমিকা রাখবে, এটাই স্বাভাবিক।

তবে একটি প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে, কেন ন্যাটো বাহিনী গত ২০ বছর ধরে তালেবানকে রুখতে পারল না। এর জবাব মূলত আশরাফ ঘানি এবং কাবুলের পাকিস্তানবিরোধী পক্ষই ভালো জানে।

শত শত বিলিয়ন ডলার খরচ করে ও হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েও আফগানিস্তানে পশ্চিমা দখলদাররা পরাজিত হয়েছে। মার্কিন দখলদাররাও কাবুলে পাকিস্তানের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেনি। বিশেষ করে যখন তারা দেখেছে, খোদ আফগান বাহিনীও তালেবানকে ঠেকাতে অক্ষম।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর সৌদি আরব ও আমিরাতের সঙ্গে পাকিস্তানও তালেবানকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তখন থেকেই আফগান পলিসির সঙ্গে পাকিস্তান জড়িত। তবে পাকিস্তানের শীর্ষ নেতারা মনে করেন, কাবুলে পাকিস্তান নাক গলাতে চায় না। কাবুলের উচিত, তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের পতনের আগেই সমস্যার সমাধান করা।