ভিন্নমত দমনে ইসরায়েলি প্রযুক্তি ব্যবহার করছে সৌদি!

গোপনভাবে একটি সাইবার নজরদারি ফার্মের মাধ্যমে সৌদি সরকারকে সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। খাসোগি হত্যাকাণ্ডেও ইসরায়েল গোয়েন্দা প্রযুক্তি দিয়ে সৌদিকে সহায়তা দেয়। ইসরায়েলি সরকারের কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমে এই তথ্য ফাঁস হয়েছে। নিউইয়রক টাইমসের বরাত দিয়ে এমন খবর দিয়েছে দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।

এনএসও গ্রুপ

২০১৮ সালে খাসোগি হত্যার সময় ‘এনএসও গ্রুপ’ নামে একটি ফার্ম সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। তাদের আশঙ্কা ছিল, সৌদি আরব এই ফার্মের প্রযুক্তি জঘন্য অপরাধ সংঘটনে কাজে লাগাতে পারে। ইসরায়েল সরকার এনএসওসহ আরও দুটি কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে, যারা সৌদি সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। এসময় ইসরায়েল একইরকম আরও একটি কোম্পানির লাইসেন্স দেয়, যেটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজে লাগানো যাবে। একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে জড়িত তিন ব্যক্তি এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তখন থেকেই সৌদি আরব ইসরায়েলের সরবরাহ করা গোয়েন্দা প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিপক্ষের ওপর নজরদারি করে আসছে। বিশেষ করে টার্গেট করা হচ্ছে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে।

জামাল খাসোগি

প্রকৃত ঘটনা হলো, ইসরায়েল সরকার সৌদি আরবের সঙ্গে গোপনে গোয়েন্দা ডিভাইস দিয়ে সহায়তা করছে বহুদিন ধরে। ইরানকে উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন করতে অন্যান্য দেশগুলোকে সৌদির পক্ষে কাজ করার জন্য উৎসাহিত করাই মূলত ইসরায়েলের মিশন।

এনএসও ইসরায়েলের একটি পরিচিত গোয়েন্দা ফার্ম, যা এর আগে বিদ্রোহীদের তথ্য জানার কাজে বহুবার ব্যবহার করা হয়েছে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন সরকারের গোপনীয় তথ্য জানতেও এটি কাজে লাগায় দেশটি। এমনকি জেলখানা এবং মানবাধিকার কর্মীদের ওপরও গোয়েন্দাগিরি চালায় তারা।

এনএসও ‘প্যাগাসাস’ নামের প্রযুক্তিটি সৌদি আরবের কাছে ২০১৭ সালে বিক্রি করা হয়। দেশের মধ্যে ভিন্নমত দূর করতে সৌদি সরকার বিভিন্ন নির্মম অভিযানে ব্যবহার করে এই প্রযুক্তি। বিদেশে যারা সৌদিবিরোধী মনোভাব সৃষ্টিতে কাজ করত তাদের বিরুদ্ধেও সৌদি সরকার এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে।

তবে সাংবাদিক খাসোগি হত্যায় সৌদি আরব ইসরায়েলের সরবরাহ করা ঠিক কোন গোয়েন্দা ডিভাইসটি ব্যবহার করেছে তা পরিষ্কার নয়। সৌদিতে ‘ক্যান্দিরু’ নামে একটি কোম্পানিকেও কাজ করার লাইসেন্স দিয়েছে ইসরায়েল, যেটির মাধ্যমে ১০০ জনের বেশি সাংবাদিক, রাজনীতিক, বিরোধীকর্মী ও মানবাধিকার আইনজীবীর বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানো হয়েছে।