আপনি পড়ছেন

বিশ্বজুড়ে চলছে করোনার প্রাদুর্ভাব। এর মধ্যে পড়ালেখা থেমে থাকলেও থেমে থাকছে না শিক্ষার্থীদের পথচলা। অ্যাসাইমেন্ট, শর্ট পরীক্ষা ইত্যাদির মাধ্যমেই নির্ধারিত হচ্ছে ফল। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এমনই এক পরীক্ষার ফলে ৫০০ নম্বরের মধ্যে মাত্র এক নম্বর কম পেয়ে আলোড়ন তুলেছে এক মুসলিম ছাত্রী।

rumana 1দাদি ও বাবার সাথে ফল দেখছে রুমানা সুলতানা

গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কাউন্সিল এ ফল ঘোষণা করে। ফলে দেখা যায়, উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯০ দশমিক ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। ওই ফলাফলের শীর্ষে রয়েছে রুমানা সুলতানা নামে এক মুসলিম শিক্ষার্থীর নাম। সে মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি থানার শিবরামবাটি এলাকার বাসিন্দা। রুমানা কান্দির রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এ বছর পরীক্ষা দিতে না পারলেও দু বছর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৮৭ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থান অধিকার করেছিলেন।

রুমানার বাবা রবিউল আলম ভরতপুর গয়েশাবাদ অচলা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন। মা সুলতানা পারভিনও আরেক স্কুলের শিক্ষিকা। শিক্ষক পরিবারের সদস্য রুমানার সাফল্যে তাই স্বাভাবিকভাবেই খুশি তার পরিবার, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রতিবেশীরা। জেলার মেয়ে হিসেবে পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক অধীর চৌধুরীও। তিনি ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট করেন।

rumana 2মায়ের সাথে রুমানা

মাধ্যমিক পরীক্ষায় পঞ্চম হওয়া রুমানাকে অবশ্য এবার প্রথম স্থান অধিকারী হিসেবে কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি। পরীক্ষা না হওয়ায় আনুষ্ঠানিক কোনো মেধা তালিকা ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু ৫০০-এর মধ্যে ৪৯৯ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীর জন্য তো আর কোনো ঘোষণার প্রয়োজন পড়ে না।

ফল তো পাওয়া গেল, এবার কী? এ বিষয়ে রুমানা জানায়, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত পরীক্ষা নেয়া যায়নি। যেহেতু এ বার অন্যবারের মতো পরীক্ষা হয়নি, তাই আমার অনুরোধ এর ফলেও তেমন বেশি গুরুত্ব না দিতে। রুমানা জানায় সে ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায়।

স্থানীয় পর্যায়ে জানা গেছে, রুমানার দাদা মুহাম্মদ সৈয়দ ছিলেন কান্দি কলেজের দর্শন শাস্ত্রের ছাত্র। তিনি ১৯৬২ সালে সাম্মানিক স্তরে দর্শনে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। পেশায় তিনি ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। সেই মধুর স্মৃতি স্মরণ করে রুমানার দাদি সালেহা বানু বলেন, ‘রুমানা আমার স্বামীর ইচ্ছা পূরণ করেছে। আজ আমি খুব খুশি।