বিক্ষোভে উত্তাল ভারতের পার্লামেন্ট

বিরোধী দলগুলোর তীব্র প্রতিবাদের মুখে গতকাল সোমবার ভারতের উভয় কক্ষের অধিবেশন বেশ কয়েকবার মুলতবি করা হয়েছে। পেগাসাস ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে তাদের চিৎকার ও স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে ভারতের পার্লামেন্টের রাজ্যসভা ও লোকসভা। পার্লামেন্ট সদস্যরা অব্যাহতভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছ থেকে এ খবরের ব্যাখ্যা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেন।

লোকসভা

গত ১৯ জুলাই রাজ্যসভা-লোকসভার বর্ষাকালীন অধিবেশন শুরু হয়। এর আগের দিনই ফোনে আড়িপাতার মাধ্যমে পেগাসাসের গুপ্তচরবৃত্তির খবর সামনে আসে।

সরকার এ বিষয়ে নিজেদের সাফাই গাইলেও এ ইস্যুতে বিরোধীরা তাদের ওপর অব্যাহতভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। গত সপ্তাহে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দিতে দাঁড়ান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। কিন্তু তার কাছ থেকে কাগজ নিয়ে ছিড়ে ফেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি শান্তনু সেন। এ ঘটনায় তাকে সাসপেন্ড করা হয়।

ভারতের পার্লামেন্ট ভবন

পেগাসাস ইস্যুতে প্রায় প্রতিদিনই বিরোধীদের বিক্ষোভে দফায় দফায় বাতিল করতে হচ্ছে অধিবেশন। এ পরিস্থিতি নিরসনে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বিরোধীদের কাছে আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার কংগ্রেস এমপি মনীশ তিওয়ারি ও এনসিপির এমপি সুপ্রিয়া সুলের সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে কথা বলেন পার্লামেন্ট বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী।

কিন্তু শান্তনুর সাসপেন্স বা প্রহ্লাদ জোশীর সাক্ষাৎ কোনো কিছুতেই কিছু হয়নি। সোমবার রাজ্যসভার অধিবেশনের শুরু থেকেই এ বিষয়সহ নানা ইস্যুতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিরোধী দলীয় সদস্যরা।

পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু। তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, এমনকি পেগাসাস ইস্যুতে সরকারের যুক্তি প্রদর্শন কোনো কিছুই করা যায়নি। ৬৩ জন এমপি ৫৭টি বিষয়ে বিল এনেছিলেন, কিন্তু গত সপ্তাহে কোনো কিছুই অধিবেশনে তুলে আনা যায়নি।

অন্যদিকে লোকসভার চিত্রও ছিল অভিন্ন। প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হলেও বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে আট মিনিট পরই স্পিকার ওম বিড়লা অধিবেশন স্থগিত করে দিতে বাধ্য হন। তিনি বলেন, আমরা দিন দিন হেল্পলেস হয়ে যাচ্ছি।

জানা গেছে, এসব বিক্ষোভের কারণে এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও রাজ্যসভায় এখন পর্যন্ত কোনো বিল পেশ করা যায়নি। কোনো আলোচনা করা যায়নি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও।