বিক্ষোভ সত্ত্বেও অ্যান্টি-কোভিড বিল পাস

ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেই ফ্রান্সের পার্লামেন্টে কোভিড বিষয়ক একটি বিল পাস হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার (২৬ জুলাই) সকালের দিকে এ বিলে অনুমোদন দেন আইনপ্রণেতারা। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে এ বিল কার্যকর হতে যাচ্ছে। আপাতত এটি শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তবে শিগগিরই তা ১২ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সী শিশুদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।

ফ্রান্সের পার্লামেন্ট

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জিন ক্যাসটেক্স বিলটি বর্তমানে সাংবিধানিক কাউন্সিলের কাছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য পাঠিয়েছেন। কাউন্সিল আগস্টের ৫ তারিখের মধ্যে এ ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।

এর আওতায় দেশের অভ্যন্তরে কোভিড-১৯ পাস বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এতে যে কোনো গণপরিবহন বা পাবলিক প্লেসে যাওয়ার ক্ষেত্রে ডিজিটাল স্বাস্থ্য পাস প্রয়োজন হবে এবং সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে দেশের সব স্বাস্থ্যকর্মীকে অবশ্যই করোনার টিকা নিতে হবে।

প্যারিসে চলছে বিক্ষোভ

গত সপ্তাহে এ বিলটি পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, প্লেনে বা ট্রেনের মতো গণপরিবহনে ভ্রমণের জন্য অথবা রেস্তোরাঁ-ক্যাফেসহ অন্যান্য পাবলিক প্লেসে জমায়েত হতে চাইলে ‘হেলথ পাস’ দেখাতে হবে। দুই ডোজ টিকা নেয়ার মাধ্যমে বা কয়েকদিনের মধ্যে করোনা টেস্ট করে নেগেটিভ ফলের সনদ পেলে বা করোনা থেকে সেরে ওঠার প্রমাণ থাকলে এ পাস পাওয়া যাবে।

ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভার ভেরান টুইটারে এক পোস্টে বলেন, ৬০ ঘণ্টা ধরে চলা বিতর্কের পর সংখ্যাগরিষ্ঠ ও বিরোধীরা করোনা মহামারির বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করার কোনো পথ খুঁজে পেয়েছেন। বিলে স্বাস্থ্যখাতে যারা কাজ করছেন ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের টিকা নেয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। এরপরও যদি তারা টিকা না নেন তবে তাদের চাকরি থেকে সাময়িক স্থগিত রাখা হবে। এছাড়া তাদের বেতনও বন্ধ রাখা হতে পারে। ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত এ বিধি কার্যকর থাকবে। তারপর পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে এ বিল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কার্যকর হলেও পরবর্তী সময়ে সবার জন্যই এ পাস প্রয়োজন হবে।

ভারতে শনাক্ত হওয়া করোনার ডেল্টা রূপের ব্যাপক সংক্রমনের পরিপ্রেক্ষিতে চতুর্থ ঢেউ রোধে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত ১২ জুলাই এ বিল প্রবর্তনের ঘোষণা দেন।

এই বিলের প্রতিবাদে অবশ্য দেশটিতে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। লক্ষাধিক মানুষ এ বিলের বিপক্ষে রাস্তায় নামেন। কোথাও কোথাও বিক্ষোভের সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

উল্লেখ্য, জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ফ্রান্সের ৪৪ শতাংশ মানুষ টিকার সম্পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন।