আফগানের সঙ্গে বর্ডার ক্রসিং খুলে দিল পাকিস্তান

তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগান সীমান্তের ‘চামান-স্পিন বোলডাক ক্রসিং’ আবারও খুলে দিয়েছে পাকিস্তান। এই বর্ডার ক্রসিং কান্দাহার প্রদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সীমান্ত সংলগ্ন বন্দর কাস্টমস। পাকিস্তানি একজন কাস্টমস অফিসার রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আফগান সীমান্তের চামান-স্পিন বোলডাক ক্রসিং

খবরে বলা হচ্ছে, পাকিস্তান সরকার ১০০টি পণ্যবাহী ট্রাক আফগানিস্তানে ঢোকার অনুমতি দিয়েছে। চলতি মাসের প্রথম দিকে বর্ডার ক্রসিংটি তালেবান দখল করে নিলে পাকিস্তান সীমান্তটি বন্ধ করে দিয়েছিল। খবর টোলে নিউজের।

চামান পাসের সিনিয়র কর্মকর্তা আরিফ কাকার বলছেন, মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) পাকিস্তান বর্ডার ক্রসিংটি খুলে দিয়েছে। তারা আবারও পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু করেছে। বাণিজ্য কেন্দ্রটি সপ্তাহে ছয়দিনই খোলা থাকে। তবে এ ব্যাপারে আফগান সরকারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গত সোমবার (২৬ জুলাই) আফগান বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, সীমান্ত এলাকা তালেবানের দখলে চলে যাওয়ার পর গত এক মাসে দেশটি ২.৭ বিলিয়ন রাজস্ব হারিয়েছে। আফগানের বাণিজ্য পরিস্থিতির ভয়াবহ অবস্থা জানার পরপরই পাকিস্তান বর্ডার ক্রসিংটি খুলে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

খবরে বলা হয়, হেরাতের ইসলাম কালাসহ সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত শহর তালেবানের দখলে চলে গেছে। দখলে চলে যাওয়া আরো কিছু শহর হলো- ফারাহ প্রদেশের আবু নসর ফারাহি, কান্দাহারের স্পিন বুলডাক, তাখারের আই খানুম, পাকতিয়ার দান্দ পাতান এবং কুন্দুজ প্রদেশের শিরখান।

সীমান্ত এলাকার সাতটি কাস্টম ডিপার্টমন্টের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে গেছে। ইরান সীমান্তের ইসলাম কালা কাস্টমস এলাকা আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য কেন্দ্র, যেটি গত ২১ দিন ধরে তালেবান নিয়ন্ত্রণ করছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাফি তাবে বলছেন, জাউজা থেকে ২২ মে-২২ জুন পর্যন্ত আয় ছিল ৭.৩ বিলিয়ন আফগানি। কিন্তু ২৩ জুন থেকে ২৩ জুলাই তা কমে ৪.৬ বিলিয়নে নেমে এসেছে। সরকারের রাজস্ব নির্ভর করে বাণিজ্যের ওপর। বাণিজ্য ভালো হচ্ছে না বলে রাজস্বও আসছে না।

বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা বলছেন, সীমান্ত শহরগুলোর বাণিজ্য গোটা দেশে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এসব এলাকা আফগানিস্তানের বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার। ব্যবসায়ীরা আমদানি না করতে পারলে বাণিজ্য খাত ধরে রাখা কঠিন হবে।

চেম্বার অব ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান শফিকুল্লাহ আতায়ী বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে বাজারে পণ্যের ঘাটতি পড়ে যাবে। অবস্থার উন্নতি না হলে আমরা ভয়াবহ সংকটে পড়ে যাব। এ জন্য সরকারের উচিত সবরকম কৌশল কাজে লাগানো।

কুন্দুজের কয়েকজন বিনিয়োগকারী জানান, শিরখান বন্দর দিয়ে তাজিকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য কমে গেছে। ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নাসিম রাসুলি বলেন, শিরখান বন্দর দিয়ে যারা আমদানি করত তাদের অধিকাংশই এখন কাবুলে চলে গেছে।

ব্যবসায়ীদের পরামর্শ, সীমান্তের কাস্টমসগুলো সরকারি নিয়ন্ত্রণে না এলে এই ক্ষতি থেকে দেশকে বাঁচানো যাবে না। আফগানিস্তানে যুদ্ধের প্রভাব বাণিজ্যখাতে ব্যাপক আকারে দেখা দিয়েছে। দ্রব্যমূল্য ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। স্থানীয় বাজারে জ্বালানি তেলের দাম প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।