ইরান-ব্রিটেনের পাল্টাপাল্টি তলব

ওমান জলসীমায় ইসরায়েলি তেল ট্যাঙ্কারে হামলায় বিট্রিশ নাবিক নিহত হওয়ার ঘটনায় ইরান-ব্রিটেন পাল্টাপাল্টি দূত তলব করেছে। সোমবার (২ আগস্ট) সকালে ব্রিটেনে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহসেন বাহারবন্দকে তলব করা হয়। একইদিন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তেহরানে নিযুক্ত ব্রিটেনের চ্যার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে।

গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) ওই তেল ট্যাঙ্কারে হামলায় এক ব্রিটিশ ও এক রোমানিয়ার নাবিক নিহত হয়। হামলার পরই ইসরায়েল, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে দোষারোপ করে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ারও ঘোষণা দেন। তবে ইরান বরাবরই অভিযোগটি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে। প্রেস টিভি।

খবরে বলা হয়, সোমবার প্রথমে তেহরানে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের থার্ড ওয়েস্টার্ন ইউরোপিয়ান ব্যুরোর প্রধান।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়াই মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন। ইরানের বিরুদ্ধে আগেও ব্রিটেন এরকম জঘন্য মিথ্যাচার করেছে, কিন্ত তা তারা প্রমাণ করতে পারেনি। আমরা এই ডাহা মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান ও জঘন্য মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানাই।’

ইরান কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, ব্রিটেন শুধু এবারই এমন মিথ্যা অভিযোগ করেনি, আগেও এ ধরনের জঘন্য অভিযোগ তারা করেছিল। ইরান প্রমাণ চাইলে তারা তা দিতে পারেনি। পারস্য উপসাগরে অস্থিতিশীলতার জন্য ইরান দায়ী নয়। ইরান শুধু নিজেকে রক্ষা করে। গায়ে পড়ে আমরা হামলা করি না। আমরা চাই পারস্য উপসাগরে জাহাজ চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক। আমরা এই জলপথের নিরাপত্তা আরও বাড়াতে তৎপর।

বৈঠকের পর ব্রিটেনের দূত ইরানের প্রতিবাদ তার দেশে দ্রুত পৌঁছে দেবেন বলে জানান। ২৯ জুলাই ইসরায়েলের তেল ট্যাংকারে হামলার পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিড বলেন, হামলার পর তিনি ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। হামলার কঠিন প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

আক্রান্ত হওয়ার সময় জাহাজটি উত্তর ভারত মহাসাগরে অবস্থান করছিল। জাহাজটিতে কোনো কার্গো ছিল না। জাহাজটির গন্তব্য ছিল তানজানিয়ার দারুস সালাম থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজায়রাহ শহর।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল নেভির মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস এক বিবৃতিতে জানায়, ওমান উপকূলের ১৫২ নটিক্যাল মাইল বা ২৮০ কিলোমিটার দূরত্বে একটি জাহাজ হামলার শিকার হয়েছে। এটা জলদস্যু সংক্রান্ত কোনো হামলা নয় বলে তারা জানায়।

মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞ ড্রাইয়াদ গ্লোবাল বলছেন, একবছর আগে ইরান-ইসারায়েল সংশ্লিষ্ট একটি হামলার ঘটনার সঙ্গে এই হামলার মিল রয়েছে। ওই সময় ইসরায়েলি জাহাজে হামলা করেছিল ইরান।

হামলার পর বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেন, ইরানের অভ্যন্তরে যেকোনো হামলার ঘটনা ইসরায়েল করেছে বলে ধরে নেয় ইরান। একইরকম মনে করে ইসরায়েলও। ইসরায়েলের জাহাজটিতে যে এলাকায় হামলা হয়েছে তা ইরানের প্রতিশোধ পরায়ণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত।