সংকট কাটাতে সেনা মজুদে হাত উত্তর কোরিয়ার

তাপপ্রবাহ ও খরার কারণে ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। এ অবস্থা সামলাতে আপাতত সামরিক চালের মজুদ বাজারে ছাড়ছে দেশটি। মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দক্ষিণ কোরিয়ার একটি গুপ্তচর সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (এনআইএস) এ তথ্য জানিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে।

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন, ফাইল ছবি

দীর্ঘস্থায়ী করোনা মহামারির কারণে অন্যান্য দেশের মতো উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতিও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় সংকট আরো বাড়িয়েছে অস্বাভাবিক তাপ প্রবাহ ও খরা। এ কারণে দেশটির খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। মারা গেছে খামারের পশুও। পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, আগামী মৌসুমের ফসল না ওঠা পর্যন্ত এ সংকট চলবে।

তবে আপাতত সংকট পূরণে দেশটি যুদ্ধকালীন বা আপৎকালীন সময়ের জন্য রাখা চালসহ অন্যান্য শস্য বিতরণ করছে। পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ব খরাকে ‘জাতীয় অস্তিত্বের বিষয়’ হিসেবে বিবেচনা করে তা মোকাবেলা করতে যাচ্ছে।

পিয়ংইয়ংয়ের একটি জমিতে চাষাবাদ করছে দুই চাষী

উত্তর কোরিয়ার দুই কোটি ৬০ লাখ লোকের জন্য সাড়ে পাঁচ কোটি টন খাদ্যের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এ বছর এক কোটি টন খাদ্যশস্যের ঘাটতি রয়েছে। ফলে উত্তর কোরিয়ার খাদ্যশস্যের মজুদ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশটিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যশস্য চালের দাম একলাফে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় স্পর্শকাতর এ ইস্যুতে জনগণকে স্থিতিশীল রাখতে সেনাবাহিনীর চালের মজুদের দিকে হাত বাড়িয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

দক্ষিণ কোরিয়ার একজন বিশেষজ্ঞ কোওন তে-জিন বলেন, উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের খাদ্য ঘাটতি আগেও ছিল। কিন্তু সে সময় চীনের সাথে স্বাভাবিক আমদানি-রপ্তানি ও চোরাচালানের মাধ্যমে এ ঘাটতি পূরণ করা হতো। কিন্তু করোনার কারণে এ ধরনের সব লেনদেন বন্ধ থাকায় উত্তর কোরিয়ার এ সংকট জটিলতর হয়েছে।

বিশ্বের অন্যতম রহস্যময় দেশ উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে বাইরে খুব কমই খবর আসে। কিন্তু কিছুদিন আগে দেশটির নেতা কিম জং উনের একটি বক্তব্য প্রচারিত হয়, যাতে তার দেশের আসন্ন খাদ্য সংকটের কথা উল্লেখ করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, করোনা মহামারিসহ অন্যান্য অসুবিধার কারণে সম্ভবত তার দেশ খাদ্য ঘাটতির ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে যাচ্ছে।