তালেবান দমনে এবার বি-৫২ বোমারু বিমান!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তালেবান যোদ্ধাদের দমনে বি-৫২ বোমারু বিমান ও ড্রোন হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। বাইডেন এমন এক সময় এই নির্দেশ দিলেন যখন তালেবান দুটি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করে নিয়েছে। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মেইল অনলাইন। টোলো নিউজ।

খবরে বলা হচ্ছে, বি-৫২ বোমারু বিমানের পাশাপাশি এসি-১৩০ স্পেক্ট্রে গানশিপ থেকে হামলা করা হবে । এই গানশিপ থেকে ২৫এমএম বহুনলা বন্দুক এবং ৪০এমএম ও ১০৫এমএম এম১০২ বিমান বিধ্বংসী কামান ব্যবহার করা যায়। আকাশ থেকে এগুলো নিখুঁত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে সক্ষম।

বর্তমানে আফগান সরকারি বাহিনী কুন্দুজ, তাকহার ও বাদাকশান প্রদেশের রাজধানী শহরে তীব্র লড়াইয়ে লিপ্ত। কুন্দুজের জনস্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়ায় কুন্দুজ শহরের যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১১ বেসামরিক লোক নিহত ও অন্তত ৩৯ জন আহত হয়েছে।

বাদাকশানের পুলিশ জানাচ্ছে, সরকারি বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে তালেবান ফয়জাবাদ শহর থেকে পিছু হটেছে। অবশ্য দুই দিনে তালেবানের হাতে চলে গেছে দুটি প্রাদেশিক রাজধানী।
সেগুলো হলো- উত্তর আফগানের জাউঝান প্রদেশের রাজধানী সেবারঘান এবং দক্ষিণপূর্ব আফগানের নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী জারাঞ্জ। এক সপ্তাহ যুদ্ধ করার পরও সেবারঘানের পতন ঠেকাতে পারেনি সরকারি বাহিনী।

জাউঝানের আইন প্রণেতারা বলছেন, সরকারের অমনোযোগের কারণে সেবাঘানের মতো শহর তালেবানের হাতে চলে গেল। তাদের অভিযোগ সরকার যেন উদাসীন। তবে নিমরোজের জারাঞ্জ শহর কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই দখল করেছে তালেবান।

এই পরিস্থিতির পর শনিবার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্শাল আবদুল রশিদ দোস্তামের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবনে আলোচনায় বসেন। দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের সবশেষ অবস্থা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।

বৈঠকে দোস্তাম সরকারের পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেন। তিনি বেলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি করার চূড়ান্ত সময় এসে গেছে। আমরা আফগানিস্তানের মূল্যবোধ ভূলুণ্ঠিত হতে দেব না।

দোস্তামের মুখপাত্র এহসানুল্লাহ নাইরো বলেন, দোস্তাম তালেবানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ঘানির কাছে একটি পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। পরিকল্পনাটি প্রেসিডেন্টের পছন্দ হয়েছে।

এদিকে সাধারণ জনগণ সরকারি বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। বিশেষ করে মাত্র দুদিনে দুটি প্রদেশের রাজধানীর পতনের পর এ ধারনা জন্মেছে জনগণের মনে। তারা বলছে, তথাকথিত সরকারি বাহিনী তালেবানের প্রতিরোধের মুখে দাঁড়াতেই পারছে না।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, সরকারি সৈন্যরা গাড়িতে অস্ত্র-সরঞ্জাম নিয়ে ইরান সীমান্তের দিকে চলে যাচ্ছে। কোনো ছবিতে রয়েছে জারাঞ্জ শহর ত্যাগ করার দৃশ্য। তালেবানের বিরুদ্ধে তারা কোনো প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি।

সমালোচকরা বলছেন, সেবারঘানে সরকারি বাহিনীর প্রতি জনগণের যে প্রত্যাশা ছিল, তার কিছুই দেখাতে পারেনি তারা। সেখানে শুধু মার্শাল আবদুল রশিদ দোস্তামের ছেলে ও তার বাহিনীকে তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেখা গেছে।