ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি: আশা দেখছে ইইউ

ইরান সঙ্গে করা ছয় জাতিগোষ্ঠীর পারমাণবিক চুক্তি পুনরায় কার্যকর হওয়ার আশা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আগামী মাসে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ওয়াশিংটন-তেহরান বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

চুক্তির মধ্যস্থতাকারী ইউ কর্মকর্তারা বলছেন, ইরানের নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাতিল হওয়া চুক্তি পুনরায় কার্যকর করার সুযোগ এসেছে। আশা করা হচ্ছে সেপ্টেম্বরের শুরুতে চুক্তিটি কার্যকর হয়ে যাবে। এপি, ডেইলি সাবাহ।

২০১৫ সালে ছয় দেশের সঙ্গে ইরানের করা পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অপর পাঁচটি দেশ হলো ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও রাশিয়া। এ দেশগুলো পি-ফাইভ প্লাস ওয়ান পরাশক্তি নামে পরিচিত।

ওই চুক্তির ফলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থেকে সরে আসে ইরান। চুক্তিতে বলা হয়েছিলো, ইরানের কাছে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ আছে তার ৯৮ শতাংশ কমিয়ে ৩০০ কেজিতে নামিয়ে আনতে হবে।

চুক্তি অনুযায়ী ইরান অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম প্লুটোনিয়াম উৎপাদন বন্ধ রাখে। শর্ত মেনে নেওয়ার ফলে ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত সব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে গিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে আগের নিষেধাজ্ঞাগুলো বহাল করে। এতে চুক্তি ভেঙ্গে যায়।

ইরানও স্বাভাবিকভাবেই চুক্তির শর্তগুলো মানার প্রয়োজন বোধ থেকে সরে আসে। চুক্তিতে থাকা অন্যান্য দেশগুলো চাচ্ছে ইরান পারমাণবিক চুক্তি আবার কার্যকর হোক। এ লক্ষ্যে ছয়বার ওয়াশিংটন-তেহরান বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু চুক্তি কার্যকরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়নি। আর এই আলোচনার মধ্যস্থতা করছে ইইউ।

সম্প্রতি ইরানের নতুন সরকারের কাছ থেকে আভাস পাওয়া গেছে, সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ওয়াশিংটন-তেহরান বৈঠকে বাতিল হওয়া চুক্তিটি আবার বহাল হতে পারে।

ইইউ'র একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলছেন, সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ওয়াশিংটন-তেহরান আলোচন বসবে। এ আলোচনায় সমঝোতা আলোর মুখ দেখতে পারে।

চুক্তি নবায়নে ২০১৫ সাল থেকে দু'পক্ষ আলোচনায় বসে আসছে। অপর দেশগুলির কূটনীতিক প্রচেষ্টাও এতে যুক্ত রয়েছে। ইরান চাচ্ছে তাদের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক।

গত জুনের মাঝামাঝি ইরানের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনী কার্যক্রমের জন্য ওয়াশিংটন-তেহরান পারমাণবিক চুক্তি আলোচনা স্থগিত হয়ে পড়ে। এখন দেশটিতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ইব্রাহিম রাইসি।

ইইউ কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, পারমাণবিক চুক্তির আলোচনা মূলত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল করে থাকে। রাইসির সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হোসেন আমির আবদোল্লাহিয়ান নিয়োগ পেতে পারেন। তিনি ইইউতে প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি দেশটির ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।