কঠিন সময়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন। আজ বুধবার তাকে রাজার কাছে প্রমাণ করতে হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপি তার পক্ষে রয়েছেন। মুহিউদ্দিন ইয়াসিন গত সপ্তাহে নিজ জোট ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাজেশনসের (উমনো) এমপিদের বিরোধিতার মুখে পড়েন। তবে তিনি দাবি করেন, রাজা আগামী সেপ্টেম্বর মাসে তাকে আস্থা ভোটে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

১০৫ এমপি মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে রাজার কাছে চিঠি দিয়েছেন। তারা ১৩ দফা দাবি সংবলিত একটি ঘোষণাও চিঠির সঙ্গে যুক্ত করেছেন যাতে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন জানান, বুধবার সুলতান আবদুল্লাহর সঙ্গে দেখা করে নিজের অবস্থান তিনি পরিষ্কার করবেন। তার বিশ্বাস তিনি রাজাকে বোঝাতে সক্ষম হবেন যে, তার পক্ষে এখনও সংখ্যাগরিষ্ট এমপিরা রয়েছেন এবং আগামী মাসে আস্থা ভোটের সুযোগ দিলে তিনি সরকার ধরে রাখতে পারবেন।

কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী সুলতানকে ভুল বোঝাতে চেষ্টা করছেন। এর আগেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর সুলতান তাকে তলব করেছিলেন।

বিরোধীপক্ষের দাবি, সুলতান যদি মহিউদ্দিনের যুক্তিতে সন্তুষ্ট না হন, তাহলে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অর্থাৎ দু'বছরের জন্য একজন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হোক।

তারা দাবি করছেন প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিনকে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে, অথবা বিকল্প হিসেবে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের পথ সুগম করতে সরকার ভেঙ্গে দিতে হবে। এ দাবিতে বিক্ষোভ করার জন্য লোকজন জড়ো হলেও করোনার কারণে বিক্ষোভ করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, আগামী অক্টোবরের মধ্যে সব বয়স্কদের টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয় মালয়েশিয়া সরকার এবং ইতোমধ্যে ৭০ ভাগ মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, আস্থা ভোট না হওয়া পর্যন্ত মুহিউদ্দিন তার পদে টিকে থাকবেন। তবে সংসদীয় বৈঠক এগিয়ে আনার জন্য ক্রমাগত চাপ বাড়ছে সুলতানের কাছে। সেক্ষেত্রে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বৈঠক ডাকতে বাধ্য করতে পারেন।

৯ আগস্ট উমনোর প্রধান জাহিদ হামিদির নেতৃত্বে দুটি চিঠি পাঠায় সুলতান আবদুল্লাহর প্রাসাদে। ওই চিঠিতে জানানো হয়, পার্টির ৩৮ এমপির মধ্রে ১৪ জন সরকারের পক্ষ থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

তবে উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকোব ও একদল এমপি সরকার ভেঙ্গে দেওয়ার বিরোধীতা করেছেন। ৬ আগস্ট তাদের পক্ষ থেকে সুলতানকে জানানো হয়, উমনো নেতৃত্বাধীন বারিশান ন্যাশনালের ৪২ এমপির মধ্যে ৩১ জন মুহিউদ্দিনের পক্ষে আছেন।

তারা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মুহিউদ্দিনের সরকার বহাল থাকুক তা চান। কিন্তু উপ-প্রধানমন্ত্রীর ওই দাবি অস্বীকার করেন তিনজন এমপি। এতে তার দাবি ভেস্তে যাওয়ার মুখে পড়েছে।