সেনা প্রত্যাহার: আফসোস নেই বাইডেনের

আফগানিস্তানে প্রায় দুই দশক কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ যুদ্ধে তাদের যেমন ব্যয় হয়েছে, সেনাদের প্রাণও হারাতে হয়েছে। এমতাবস্থায় দেশটি আর এ যুদ্ধে নিজেদের নিয়োজিত রাখতে চায় না। সেনাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে চায়। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাজটি শুরু করেছিলেন। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর এ বিষয়টির পালে হাওয়া লাগে। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ আফগানিস্তান থেকে সব সৈন্য দেশে ফিরিয়ে নেবে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

তালেবান গোষ্ঠীকে দমনের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র আফগান যুদ্ধ শুরু করলেও কার্যত তারা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। প্রতিদিনই আফগান সরকারের হাত থেকে নতুন নতুন এলাকা চলে যাচ্ছে তালেবানের দখলে। বুধবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নয়টি প্রাদেশিক রাজধানী তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগও বলছে, সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে কাবুল দখলে নিয়ে নেবে তালেবান।

যুক্তরাষ্ট্রের এতোদিনের অবস্থান এবং হুট করে সরে যাওয়ার পরিণতি ভালোই টের পাচ্ছে আফগানিস্তান। এতে বিপদে পড়ছেন সাধারণ আফগান নাগরিকরা, চরম সংকটে পড়ে গেছে আশরাফ ঘানির সরকার।

আফগানিস্তান ছাড়ছে মার্কিন সেনারা

তবে এসব সংকটের সমাধান না করেই যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করায় কোনো আফসোস নেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় চলাকালে তিনি এ কথা বলেন।

বিশ্বের অনেক দেশ সরাসরি কিংবা বিভিন্নভাবে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেই দায়ী করছে। যেভাবে আমেরিকা সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে সমালোচনার অন্ত নেই। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মনে করেন, সেনা সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তে কোনো ভুল নেই। বরং আমেরিকা ঠিক সময়েই আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নিচ্ছে।

হোয়াইট হাউসে জো বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, আফগানিস্তানে করা সকল অঙ্গীকারই পালন করছে যুক্তরাষ্ট্র। আকাশপথে ঘনিষ্ঠ সহায়তা (তালেবানের ওপর বিমান হামলা), সামরিক বেতন পরিশোধ এবং আফগান বাহিনীকে খাদ্য ও সরঞ্জামাদি সরবরাহ করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রতিশ্রুতির বাইরে যায়নি।

তবে তিনি এটাও বলেন, তাদেরকে (আফগান বাহিনী) এখন নিজেদের জন্য যুদ্ধ করতে হবে।

এখন পর্যন্ত দেশটির ৩৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে কমপক্ষে নয়টি তালেবানের দখলে চলে গেছে। সামনের দিনে এই সংখ্যা আরো বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।