মেসি ইস্যুতে ক্ষেপে আগুন পেরেজ

স্প্যানিশ লা লিগার ‘ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’ নীতিতে ভেস্তে গেছে বার্সেলোনা ও লিওনেল মেসির নতুন চুক্তির স্বপ্ন। আর্থিক জটিলতায় বলির পাঁঠা হয়েছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। গেলো বৃহস্পতিবার রাতে বার্সা জানিয়ে দেয়, মেসি থাকছেন না ন্যু ক্যাম্পে। শোরগোল পড়ে যায় ফুটবল দুনিয়ায়। পাঁচদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মেসি যোগ দেন ফরাসি ফুটবলে।

রিয়াল সভাপতি এবং মেসি

দুই বছরের চুক্তিতে ছয়বারের বর্ষসেরা ফুটবলার পাড়ি জমান প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে (পিএসজি)। পরবর্তীতে চুক্তির মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। মেসি যোগ দেওয়ায় উৎসব নেমে এসেছে প্যারিসসহ গোটা ফ্রান্সে। আর শোক নেমে এসেছে বার্সেলোনা তথা স্পেন ফুটবলজুড়ে। মেসির দলবদল নিয়ে আপাতত সেখানে চলছে কাদা ছোড়াছুড়ি!

রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন ইস্পাই বার্সা প্রকল্পের সাবেক বোর্ড পরিচালক হুয়ামে লোপিস। তার অভিযোগ, মেসির বার্সা ছাড়ার পেছনে প্রচ্ছন্ন ছায়া হিসেবে কাজ করেছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের প্রধানকর্তা। লোপিসের দাবি, লা লিগার ‘ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’ আইনের কলকাঠি নাড়েন পেরেজ।

লোপিসের এমন অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ সভাপতি। বুধবার রাতে পেরেজ বলেছেন, ‘মেসির চলে যাওয়ায় আমার কোনো প্রভাব আছে- এটা অসম্ভব। তা ছাড়া বার্সেলোনা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আমার কোনো হাত নেই। (বার্সা) বিবৃতি দিয়েছে; মেসি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এটা এখন শেষ হয়ে গেছে। পুরো বিষয়টা তাদের ছিল।’

রিয়াল সভাপতির আহ্বান, ‘আমি আশা করছি যতো দ্রুত সম্ভব লোপিস মিথ্যা বক্তব্য সংশোধন করবেন।’ বার্সার সাবেক সংগঠকের মতে ক্লাব সভাপতি হুয়ান লাপোর্তার সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক আছে পেরেজের। বার্সা যেন মেসির সঙ্গে চুক্তি না করে- এনিয়ে লাপোর্তাকে প্রভাবিত করেন রিয়াল সভাপতি। বার্সা সভাপতি নাকি মেসির প্রতি আগ্রহ হারিয়েছেন তাতে।

তাই অভিযোগ তোলেন লোপিস, ‘মেসি চলে যাওয়ার পেছনে ফ্লোরেন্তিনোর (পেরেজ) হাত ছিল। কল্পনা করুন (কিলিয়ান) এমবাপ্পে এখন রিয়াল মাদ্রিদের চুক্তিতে সই করেছে।’ বার্সা সাবেককর্তার এই অভিযোগ হতে পারে সত্যি। কিন্তু এটা প্রমাণ করা বেশ কঠিন। লোপিসের উসকানিমূলক অভিযোগ নিয়ে অবশ্য বার্সার কোনো মাথাব্যথা নেই। আসলে মাথাটা যার ব্যথাটা তারই।

এমন নয় যে, লা লিগার আর্থিক জটিলতার কথা গেল বৃহস্পতিবারই প্রথম জেনেছে বার্সেলোনা। মেসি-বার্সা চুক্তি না হওয়ার পেছনে এটা বিরাট একটা রহস্য। কেউ কেউ মনে করেন, কাতালানরা ইচ্ছেকৃতভাবেই এই কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। যাতে দোষারোপের আঙুল না ওঠে। এক্ষেত্রে সাপও মরল লাঠিও ভাঙল না। মেসির দলবদলেও তাই দায় এড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে বার্সা।

আসলেই কি দায়টা এড়ানোর মতো?