শর্তপূরণের পরও লাল তালিকায় পাকিস্তান!

মহামারিকেন্দ্রিক তৈরিকৃত যুক্তরাজ্যের লাল তালিকা থেকে পাকিস্তানের নাম সরাতে দেশটির একদল এমপি প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে চিঠি দিয়েছেন। পাকিস্তানি ব্রিটিশ এমপিদের ২১ জনের একটি দল প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন কেন পাকিস্তানকে এখনও লাল তালিকায় রাখা হয়েছে। তারা অনুরোধ করেন, ভ্রমণের ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে যত দ্রুত সম্ভব লাল তালিকা থেকে সরিয়ে হলুদ তালিকায় আনা হোক। দ্য ডন।

পাকিস্তানের নাম সরাতে দেশটির একদল এমপি প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে চিঠি দিয়েছেন

করোনা সতর্কতায় যুক্তরাজ্যে আন্তর্জজাতিক পর্যটকদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে দেশটি তিনটি তালিকা করেছে। গ্রিন তালিকায় রয়েছে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ, এসব দেশের পর্যটকদের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয় না।

মধ্যম ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো হলুদ তালিকায় এবং বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে লাল তালিকায় রাখা হয়েছে। এসব দেশের পর্যটকদের ব্রিটেনে পৌঁছানোর পর হোটেলে ১০ দিন আইসোলেশনে থাকতে হয়।

ইয়াসমিন কুরেশি, ওয়াজিদ খান এবং রেহমান চিশতি

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার সংক্রমণ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠায় এপ্রিলের প্রথম দিকে পাকিস্তান এবং ১৯ এপ্রিল ভারতকে লাল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আগস্টের শুরুতে তালিকা হালনাগাদ করে যুক্তরাজ্য সরকার। ৮ আগস্ট বাহরাইন, কাতার, আরব আমিরাতের সঙ্গে ভারতকে লাল তালিকা থেকে সরিয়ে হলুদ তালিকায় আনা হয়। কিন্তু পাকিস্তানকে লাল তালিকায় রেখে দেওয়ায় এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন ব্রিটিশ এমপিরা।

অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ অন পাকিস্তানের সভাপতি ইয়াসমিন কোরেশির নেতৃত্বে একদল এমপি বৃহস্পতিবার একটি চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে। চিঠিতে পাকিস্তানকে লাল তালিকা থেকে সরিয়ে হলুদ তালিকায় আনার অনুরোধ করেন ব্রিটিশ এমপিরা।

চিঠিতে বলা হয়, 'পাকিস্তানকে কেন লাল তালিকা থেকে সরানো হচ্ছে না, এ বিষয়ে বার বার আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সরকারের কোনো বিভাগ আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ দাবিতে কোনো সাড়া দেয়নি।'

এমপিরা বলছেন, আমরা সংসদীয় প্রশ্ন হিসেবেও বিষয়টি উত্থাপন করেছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ জবাব দেওয়া হয়নি। এখন দীর্ঘ সময় পার্লামেন্ট বন্ধ থাকায় জবাব পাওয়াও সম্ভব হচ্ছে না।

তাদের বক্তব্য, ৫ আগস্ট থেকে এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোকে লাল তালিকা থেকে সরানো হয়েছে, অথচ পাকিস্তান এখনও লাল তালিকায়। নানা চেষ্টা করেও এর মূল কারণ জানা যায়নি।

ব্রিটিশ এমপিদের অভিযোগ, প্রথম দিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মহামারি নিয়ন্ত্রণে জুন-জুলাইয়ের ডাটা পাকিস্তান সরবরাহ করেনি, কিংবা তাদের টিকা কার্যক্রম আগের চেয়ে বৃদ্ধি পায়নি এবং স্ট্যাটাস বদলানো জন্য প্রয়োজনীয় জিনোম সিকুয়েন্সিং চলছে না।

চিঠিতে বলা হয়, বিষয়টি নিয়ে লন্ডনের পাকিস্তান হাইকমিশনে আলাপ আলোচনার পর জুন-জুলাইয়ের ডাটা হালনাগাদ করা হয়।

যুক্তরাজ্যের জয়েন্ট কমিটি অন ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন এবং ফরেইন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অফিসে ডাটাগুলো জমা দেওয়া হয়।

তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী ড. ফয়সাল সুলতান সরকারের কাছেও চিঠি দেয়া হয়েছে। তাতে পাকিস্তান সরকারের মহামারি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুরো কার্যক্রম ও ব্যাখা তুলে ধরা হয়।

এপিরা বলছেন, ড. ফসাল সুলতানের চিঠিতে মহামারিতে পাকিস্তানের পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে এবং ব্রিটিশ সরকারের শর্তগুলোও ঠিকঠাক রয়েছে। তারপরও কেন লাল তালিকা থেকে পাকিস্তানকে সরানো হচ্ছে না।

ব্রিটিশ এমপিদের প্রত্যাশা পাকিস্তানকে যত দ্রুত সম্ভব লাল তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলবে ব্রিটিশ সরকার।