আপনি পড়ছেন

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল এখন তালেবানের অধীনে। তালেবান জানিয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণভাবেই দেশের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে আগ্রহী। এদিকে, প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি রোববার সকালেই দেশ ছেড়ে তাজিকিস্তান চলে গেছেন বলে জানা গেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে কেউ কোনো তথ্য দেয়নি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, আশরাফ ঘানি ক্ষমতা ছেড়ে দিলে তালেবান প্রশাসনে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন মোল্লা আব্দুল ঘানি বারদার।

mollah bardarমোল্লা আব্দুল ঘানি বারদার, ফাইল ছবি

কে এই মোল্লা বারদার? মোল্লা আব্দুল ঘানি বারদার হচ্ছেন তালেবান আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। তালেবানের রহস্যময় সাবেক নেতা মোল্লা ওমরের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু এই বারদার। শোনা যায়, মোল্লা ওমরই নাকি তাকে বারদার ছদ্মনাম দিয়েছিলেন, যার অর্থ ব্রাদার বা ভাই।

তালেবানের অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আব্দুল ঘানি বারদার এখন তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শান্তি আলোচনায় তিনি আলোচক দলের সদস্য ছিলেন। মোল্লা ওমরের এই ডেপুটি তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত কমান্ডারদের অন্যতম বলে জানা গেছে।

mollah bardar with china deligateচীনা প্রতিনিধির সাথে মোল্লা আব্দুল ঘানি বারদার

মোল্লা বারদার নামে পরিচিত তালেবানের এই শীর্ষ নেতার জন্ম ১৯৬৮ সালে। ওরুজগান প্রদেশের দেহ রাহওদ জেলার ভিটমাক গ্রামে তার জন্ম। তিনি পোপালজাই গোত্রের একজন দুররানি পশতুন। তালেবানে তার পদবি কমান্ডার।

১৯৮০-এর দশকে তিনি সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধে কান্দাহারে যুদ্ধ করেন এবং সোভিয়েত সমর্থিত আফগান সরকারের বিরুদ্ধে আফগান মুজাহিদিনের হয়ে কাজ করেন। পরে তিনি মোল্লা মোহাম্মদ ওমরের সাথে কান্দাহার প্রদেশের মাইওয়ান্ডে একটি মাদ্রাসা পরিচালনা করেন। পশ্চিমা গণমাধ্যমের মতে, বৈবাহিক সূত্রে ওমর ও বারদার ভায়রা-ভাই। ১৯৯৪ সালে তিনি মোল্লা ওমরকে তালেবান প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন।

আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের সময় (১৯৯৬-২০০১) মোল্লা বারদার বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি হেরাত ও নিমরুজ প্রদেশের গভর্নর ছিলেন। পশ্চিম আফগানিস্তানের সেনা কমান্ডারের দায়িত্বও ছিল তার কাঁধে। যুক্তরাষ্ট্রের নথিতে তাকে আফগানিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান এবং কাবুলের সেন্ট্রাল আর্মি কোরের কমান্ডার হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আর ইন্টারপোল বলেছে যে, তিনি ছিলেন তালেবানদের ডেপুটি মন্ত্রী।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানের আইএসআই ও যুক্তরাষ্ট্রের সিআইয়ের একটি দল পাকিস্তানের করাচি থেকে তাকে আটক করে। ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর তিনি মুক্তি পান। পাকিস্তানের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর মোল্লা বারদার কাতারের দোহায় তালেবানদের কূটনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বারদার তালেবানদের পক্ষে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

তিনি সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের পাশাপাশি মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধেও অংশ নিয়েছেন। মার্কিন কর্তৃপক্ষের সাথে শান্তি আলোচনা কিংবা চীনের প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাৎ সবক্ষেত্রেই সাবলীল পদচারণা দেখা গেছে তার। সেই সাথে প্রজ্ঞাপূর্ণ অবয়বে ধারণা করা যাচ্ছে, এই পদের (প্রেসিডেন্ট) জন্য তিনি তালেবানের অন্যতম সেরা চয়েজ। তবে বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার আগে কিছুই পরিষ্কারভাবে বলা যাচ্ছে না।

এদিকে, কিছু কিছু রিপোর্টে বলা হচ্ছে, এখনই প্রেসিডেন্ট নয়, বরং সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সে সরকারের প্রধান হতে পারেন দেশটির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী আহমাদ জালালি। তবে খবরে জানা যায়, কোনো অন্তর্বর্তী সরকার নয় বরং সরাসরি ক্ষমতা চায় তালেবান।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.