আপনি পড়ছেন

মনে আছে ডা. ফেরদৌসের কথা, যিনি গত বছর সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে। করোনাকালে নিউইয়র্কের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ব্যাপক প্রসংশা পেয়েছিলেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার। সেই সুবাদেই দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু ঢাকা বিমানবন্দর থেকেই তাকে আবার নিউইয়র্কে যেতে হয়েছিল। কারণ ওই সময় অভিযোগ উঠেছিল যে, তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলব খন্দকার মোশতাকের ভাতিজা এবং বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল রশিদের খালাতো ভাই।

dr ferdous khondokarডা. ফেরদৌস খন্দকার, ফাইল ছবি

সেই ডা. ফেরদৌস খন্দকারের বিরুদ্ধে এবার যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেছেন কুইন্স এলাকার ৫ নারী। যদিও নিউইয়র্কের বাঙালি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে তিনি সুপরিচিত একজন চিকিৎসক। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময় তিনি নানা অজুহাতে রোগীদের যৌন নির্যাতন, অকারণে বুকে হাত দেওয়া, অপেক্ষাকৃত কম বয়সী মেয়েদের অযৌক্তিকভাবে স্তন পরীক্ষা এবং অন্যান্য নানাভাবে নারী রোগীদের হয়রানি করেছেন। কুইন্স সুপ্রিম কোর্টে এ মামলা হওয়ার খবর প্রকাশ করেছে নিউইয়র্কের জনপ্রিয় অনলাইন গণমাধ্যম দ্য সিটি।

গণমাধ্যমটি জানায়, মামলার অভিযোগে ডা. ফেরদৌস খন্দকারকে একজন ‘সিরিয়াল যৌন শিকারী’ হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, চিকিৎসা সেবা প্রদানের নামে কয়েক দশক ধরে কয়েক ডজন নারী ও তরুণীকে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানি করেছেন তিনি।

dr ferdows office exteriorডা. ফেরদৌস খন্দকারের চেম্বারের বহির্ভাগ, ছবি- দ্য সিটি

প্রতিবেদনে বলা হয়, ডা. ফেরদৌসের বিরুদ্ধে কয়েকজন নারী গত বছর অশোভন আচরণের অভিযোগ এনে তার প্রতিবাদ জানিয়ে অনলাইনে পোস্ট দেন। ওই সময় ডা. ফেরদৌস ৩ নারীর বিরুদ্ধে ১০ লাখ ডলারের মানহানি মামলা করেন। তবে আদালত তার মামলা তো খারিজ করেই, একই সঙ্গে বিবাদীর আইনজীবীর পারিশ্রমিক পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়। সেই প্রেক্ষাপটে এবার ফেরদৌস খন্দকারের বিরুদ্ধেই মামলা করলেন ৫ নারী।

ওই ৫ নারীর আইনজীবী এবং নারীবাদী লিটিগেশন সংস্থা ক্রুমিলার পিসির পরিচালক সুসান ক্রুমিলার দ্য সিটিকে বলেন, মানহানি মামলা করলে হয়রানির শিকার নারীরা মুখ বন্ধ করবেন বলে ভেবেছিলেন খন্দকার ফেরদৌস। তবে তার উল্টো প্রতিক্রিয়া হয়েছে। মানহানির মামলা করার জন্য খন্দকার ফেরদৌসকে বাকি জীবন অনুশোচনা করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন এই আইনজীবী।

এদিকে, বাংলাদেশি একটি গণমাধ্যম সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে ডা. ফেরদৌস খন্দকারের সঙ্গে দুই দফা (শুক্রবার নিউইয়র্ক সময় বিকেল ৫টা এবং শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা) যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ফেরদৌস খন্দকার যে মানহানির মামলা করেছিলেন, তার আইনি নথিতে বলে যে, তিনি তার রোগীদের যৌন নিপীড়ন করেননি। তিনি কখনো কাউকে শ্লীলতাহানি এবং বিনা কারণে কারো স্তন পরীক্ষাও করেননি।