সমঝোতা হলেও বরিশাল ছাড়তে হচ্ছে ইউএনও-ওসিকে

বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় মুখোমুখি অবস্থানে চলে গিয়েছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন। এ নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হলেও বরিশাল ছাড়তে হচ্ছে ইউএনও মুনিবুর রহমান এবং সদর থানার ওসি নুরুল ইসলামকে।

ইউএনও মুনিবুর রহমান এবং ওসি নুরুল ইসলাম

তাদের দুজনের পক্ষ থেকেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ইউএনও মুনিবুর রহমানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং ওসি নুরুল ইসলামকে সিলেট রেঞ্জে বদলি করার বিষয়টি চূড়ান্ত। আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি নির্দেশনা পেলেই তারা বর্তমান কর্মস্থল ছেড়ে দেবেন। তবে এ ব্যাপারে তারা মুখ খুলতে রাজি নন। দুজনেই এই বদলিকে চাকরির স্বাভাবিক বিধি হিসেবে দেখছেন।

আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের এমন মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে চারদিন ধরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিষয়টির সুরাহা হয়। গত ২২ আগস্ট রাতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদলের সরকারি বাসভবনে। এরপর জানানো হয়, চলমান দ্বন্দ্ব মিটমাট হয়ে গেছে। উভয়পক্ষ থেকে করা মামলাগুলো তুলে নেওয়া হবে।

সমঝোতা শেষে ফটোসেশন

সমঝোতা শেষে বাইরে এসে সবাই ফটোসেশনে অংশ নেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ঘটনাটিকে যতটা বড় করে দেখা হয়েছে, আসলে বিষয়টা ততটা বড় নয়। সামান্য ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল, আলোচনার মাধ্যমে সেটার সমাধান হয়েছে। নান্দনিক বরিশাল গঠনে আবার সবাই একত্রে কাজ করবেন।

জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ডে ব্যানার সরাতে যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন রাতে ব্যানার সরাতে নিষেধ করেন। এর পরও তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে হট্টগোল এবং এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়।

ইউএনওর বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষ

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সেইসঙ্গে দফায় দফায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই সময় নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসার আনসার সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোড়েন। সংঘর্ষে দুই পুলিশ, এক আনসার সদস্যসহ ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনার পরদিন পৃথক দুটি মামলা করেছেন ওসি ও ইউএনও। সেখানে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ৩০ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত ৬০২ জনকে আসামি করা হয়। এরপর চারদিনের মাথায় ইউএনও ও ওসির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করে আওয়ামী লীগ। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে- বিসিসির কাজে বাধাদান, বিনা উসকানিতে বিসিসির কর্মচারীদের ওপর গুলিবর্ষণের নির্দেশ প্রদান এবং হামলা করেছেন ইউএনও।