৩০ বছরে উচ্চ রক্তচাপের রোগী দ্বিগুণ

গত ৩০ বছরে বিশ্বব্যাপী উচ্চ রক্তচাপের রোগী দ্বিগুণ হয়েছে। এসব রোগীর সবার বয়স ৩০ বছরের ওপরে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, অর্ধেকের বেশি মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিষয়ক জার্নাল ল্যানসেট এর এক গবেষণা জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। সিএনএন।

৩০ বছরে বিশ্বে উচ্চ রক্তচাপের রোগী দ্বিগুণ, ফাইল ছবি

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, যদিও উচ্চ রক্তচাপের সহজ ও সস্তা চিকিৎসা রয়েছে তবুও রোগীদের মধ্যে চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণে অনীহা রয়েছে। মূলত স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, ব্যায়াম এবং কম দামি ওষুধ গ্রহণে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

জরিপে দেখা যাচ্ছে, উন্নত-অনুন্নত সব দেশেই উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের মধ্যে চিকিৎসায় অনীহা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতিবছর ৮.৫ মিলিয়ন বা ৮৫ লাখ মানুষ এই রোগে মারা যাচ্ছে। যার মূল কারণই হলো চিকিৎসায় অবহেলা। উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং কিডনি ফেইলরে প্রধান ভ‚মিকা রাখে।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মাজিদ ইজ্জাতি বলছেন, আমরা ১৯৯০-২০১৯ সালের মধ্যে ৩০-৭৯ বছর বয়সীদের নিয়ে জরিপটি চালিয়েছি। তাদের রক্তচাপ নির্ণয ও মাত্রার বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা সিস্টোলিক চাপ ১৪০ বা তার উপরে ও ডায়াস্টোলিক চাপ ৯০ বা তার উপরে ধরে গবেষণা করেছি।

গবেষকরা ১৮৪ দেশের মানুষের ওপর জরিপটি চালিয়েছেন। ১৯৯০ সালে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ছিল ৬৪৮ মিলিয়ন মানুষ, যা ২০১৯ সালে দাঁড়িয়েছে ১.৩ বিলিয়নে।

ইজ্জাতি বলছেন, উচ্চ রক্তচা ঠেকাতে যা সহজ, তা হল- লবণের পরিমাণ হ্রাস করা এবং ফল ও শাকসবজি গ্রহণ। যা সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য। এছাড়া সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রাথমিক পরিচর্যা সম্প্রসারণের মাধ্যমে এর রোগটি কমানো সম্ভব। কার্যকর ওষুধের নিরবচ্ছিন্ন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, উচ্চ আয়ের দেশগুলো যেমন, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং স্পেনে সবসময় উচ্চ রক্তচাপের রোগী কম। কিন্তু নিম্ন ও মধ্যআয়ের দেশ যেমন প্যারাগুয়ে, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড এবং ক্রোয়েশিয়ার মতো দেশগুলোতে উচ্চ রক্তচাপে বেশি মানুষ ভুগছে। সবচেয়ে কম মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে কানাডা এবং পেরুতে।

আর মধ্য ও পূর্ব ইউরোপ, মধ্য এশিয়া, ওশেনিয়া, আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল, ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের কিছু দেশের মানুষ উচ্চ রক্তচাপে বেশি আক্রান্ত।