আপনি পড়ছেন

কাবুল থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘটনাকে বিশ্ব মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের পতন হিসেবে বর্ণনা করছে চীনের সংবাদমাধ্যমগুলো। তবে দেশটির নীতিনির্ধারকরা আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে চান না। এ জন্য তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা প্রথম দিকের দেশ হলেও চীন এখনো তালেবানকে দেশটির বৈধ শাসক বলে স্বীকৃতি দেয়নি।

china talibanবেইজিংয়ে তালেবান প্রতিনিধিকে স্বাগত জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সাম্প্রতিক ছবি

কূটনৈতিক সূত্র এবং চীনের পররাষ্ট্র বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, তালেবানকে স্বীকৃতি দেওয়ার আগে দরকষাকষি করতে চায় বেইজিং। এ ক্ষেত্রে কোনো তাড়াহুড়া নেই। বরং 'গঠনমূলক হস্তক্ষেপ' করবে চীন। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের মতো কোনো দেশের অভ্যন্তরে সরাসরি নগ্ন হস্তক্ষেপ নয়, সঙ্কট নিরসনে গঠনমূলক হস্তক্ষেপের দিকে যাবে জিনপিং সরকার।

আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ের পর সেখানে সংঘাত দেখতে চায় না বেইজিং। তাদের লক্ষ্য- মধ্যস্থতার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগান পুনর্গঠনে সহায়তা করা। তবে চীনের কমিউনিস্ট সরকার এখনো বিবেচনা করছে যে, তালিবানের মতো কট্টরপন্থী গোষ্ঠীর প্রতিশ্রুতিতে কতটা আশ্বস্ত হওয়া যায়।

যদিও তালেবান ঘোষণা দিয়েছে, তারা আগের কঠোরতাকে দূরে ঠেলে মধ্যপন্থা গ্রহণ এবং একটি টেকসই শাসন ব্যবস্থা কায়েম করবে, যেখানে সব দলের অংশগ্রহণ থাকবে। সে উদ্দেশ্যে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে বৈঠকও করেছে তালেবান। তবে এরপরেও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে যে, স্বীকৃতি আদায়ের জন্য এই কৌশল নিতে পারে গোষ্ঠীটি। তাই আরও সময় নিয়ে তাদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতে চায় বেইজিং।

চীনের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, আফগানিস্তানে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু বেইজিংয়ের ধারণা, তালেবানরা পূর্বে ওই গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করায় এদের রুখতে কার্যত ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হবে তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, 'চীন এখনই তালেবানকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না। তবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।' একই শর্তে অপর এক কর্মকর্তা বলেন, 'তালেবান শাসন প্রতিষ্ঠায় চীন নেতৃত্ব দিবে না৷ বরং সব পক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে যাবে। যেমনটা মিয়ানমারের ক্ষেত্রে করা হয়েছিল।'

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সামরিক জান্তা এবং রাজনৈতিক দল, উভয়ের সঙ্গেই ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে বেইজিং।

চীনের ওশান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ পাং ঝং ইং বলেন, ‘‘চীনা বিশেষজ্ঞরা আফগানিস্তানকে 'গ্রেভইয়ার্ড অব এম্পায়ার' বা বড় বড় সাম্রাজ্যের পতনস্থল উল্লেখ করে দেশটি সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দিয়েছেন।"

চায়না.কম.সিন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চাইনিজ একাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ইয়ে হে ইলিন বলেন, আফগানিস্তানে চীনের প্রাথমিক আগ্রহ ছিল অর্থনৈতিক।

তিনি বলেন, 'দেশটিতে চীনের হস্তক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের থেকে অনেক আলাদা হবে। আমরা আফগানিস্তানে 'ডিভাইড অ্যান্ড রুল' কৌশল ব্যবহার করব না। এর পরিবর্তে পুনর্গঠন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে মনোনিবেশ করব।'

ইলিন আরও বলেন, 'একটি মহান জাতি হিসেবে বিশ্বে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চীন এই ফ্রন্টে সহায়তা দিতে ইচ্ছুক। সেই সাথে চীন এও বিবেচনা করবে কোথায় তাদের জাতীয় স্বার্থ রয়েছে।'

[ক্যাথরিন ওয়াংয়ের লেখা এটি, তিনি বেইজিংয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের একজন সাংবাদিক। চীনের কূটনীতি এবং প্রতিরক্ষা নীতি নিয়ে তিনি কাজ করে থাকেন।]

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.