তালেবানকে বিচ্ছিন্ন করার বিরুদ্ধে কাতারের সতর্কতা

গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মাধ্যমে আফগানিস্তানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে তালেবান। পাশাপাশি সকল পক্ষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সরকার গঠনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের স্বীকৃতি না দিয়ে শুধু একের একের পর এক শর্ত দিচ্ছে। তাদের এই শর্তের বিষয়ে সতর্ক করেছে কাতার।

কাতার ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি বলছেন, তালেবানকে শর্তের জালে আটকে কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হলে তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে আফগানিস্তানে অনিশ্চয়তা আরো বাড়বে।

তুরস্কের সরকারি গণমাধ্যম টিআরটি এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার আফগানিস্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় তিনি দেশটির আর্থ-সামাজিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি মঙ্গলবার যখন এসব কথা বলেন, তখন তার পাশে উপস্থিত ছিলেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস। তিনি বলেন, আমরা যদি এভাবে শর্ত দেওয়া শুরু করি এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেই, সেক্ষেত্রে আফগানিস্তানে একটি শূন্যস্থান সৃষ্টি হবে। সেই শূন্যস্থান পূরণ করবে কে?

এ সময় জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস বলেন, তার দেশ আফগানিস্তানকে সাহায্য করতে চায়। তবে আন্তর্জাতিক সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু পূর্বশর্ত আছে। অবশ্য আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তালেবানের সঙ্গে কথা বলা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারণ আফগানিস্তানকে আমরা অস্থিতিশীল হতে দিতে পারি না।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আফগানিস্তান অস্থিতিশীল হলে তা সন্ত্রাসবাদের জন্য সহায়ক হবে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোতে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে ভাবছি না। তবে বিদ্যমান সমস্যাগুলো কীভাবে সমাধান করা যায়, আমরা সেটা নিয়ে ভাবছি। দুই দেশের নাগরিক এবং স্থানীয় যেসব স্টাফ ছিলেন তাদের বিষয়টাও আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি।

কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সবার অংশগ্রহণে একটি সরকার গঠনের ব্যাপারে উন্মুক্ত তালেবান। এ ছাড়া নারীর অধিকার, তাদের শিক্ষা ও কাজ করার অধিকার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর কথা বলেছে তারা। আফগানিস্তানে বর্তমানে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার কারণ গত ২০ বছর তালেবানকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা।

প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছর ধরে তালেবানদের সঙ্গে দেশটির পূর্ববর্তী সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পক্ষগুলোর মধ্যে যে মধ্যস্থতা হয়েছে, মূলত তার কেন্দ্রে রয়েছে কাতার। ২০১৩ সাল থেকে দোহায় রাজনৈতিক অফিস পরিচালনা করে আসছে তালেবান।