আপনি পড়ছেন

যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এখন আর কিছু বাকি নেই। পরাশক্তি দেশটির সামনে এখন শুধু দুই দশকের ব্যয়বহুল ব্যর্থতা আর অন্ধকার ভবিষ্যৎ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পুলিশগিরি করার দিন শেষ হয়ে এসেছে ওয়াশিংটনের। এমনই মনে করছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা।

us army leave afghanistanমার্কিন সেনাদের আফগানিস্তান ছাড়ার দৃশ্য

সৌদি-ভিত্তিক আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আফগানিস্তান নিয়ে যে ‘খেলা’ খেলল আমেরিকা, তাতে আরব বিশ্বের অন্যান্য অংশেও এর কুপ্রভাব পড়েছে। এ অঞ্চলে আমেরিকার উপস্থিতি নয়, বরং অভাব ছিল একটি স্থায়ী আত্মনির্ভর কৌশলের। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি রোধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছে। এটা সম্ভবত ওয়াশিংটনের জন্য আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে অংশীদাররা আর বিশ্বাস করবে না যে, হোয়াইট হাউস তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারবে।

যুক্তরাষ্ট্রের জন হফকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব অ্যাডভ্যান্স ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো হাফেজ আল গয়েল মনে করেন, আমেরিকার জনসাধারণ আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার কিংবা বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি প্রদর্শন কমিয়ে আনতে চাচ্ছে। বিদেশে অর্থ না ঢেলে দেশের সমস্যা সমাধানের পক্ষে তাদের মতামত। এই বাস্তবতাগুলো মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এজেন্ডা আরও জটিল করে তুলেছে। বিশেষ করে বাইডেন-ব্লিঙ্কেনের ‘বিশ্ব দর্শন’ প্রতিষ্ঠার দিকেই এখন দেশটির মনোযোগ। তা হল- যুদ্ধের পরিবর্তে অংশীদার, মিত্র এবং প্রতিপক্ষের সঙ্গে সংলাপ বা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের চেষ্টা।

তিনি বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর আগের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বিশ্বে তাদের কর্তৃত্ব ফলাতে পারবে না। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি যদি বাইডেন পালন না করতে পারেন তাহলে তার মিত্ররাও তার থেকে দূরে সরে যাবে। কারণ বাইডেন প্রশাসন আফগানকাণ্ডের পর জনগণের বিশ্বাস হারিয়েছে। বিশেষ করে শান্তি প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা এবং আঞ্চলিক সংহতকরণের সুবিধার্থে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা আর বিশ্বাসযোগ্য স্থানে থাকবে না।

গয়েল তার এক নিবন্ধে বলেছেন, বিশ্বজুড়ে মার্কিন আধিপত্য শেষ হয়ে আসছে। আফ্রিকায় মরক্কো এবং আলজেরিয়া প্রায়ই পশ্চিম সাহারা নিয়ে মতবিরোধে লিপ্ত রয়েছে। দুটি দেশই উত্তর আফ্রিকা ও সাহেলের কিছু অংশে আধিপত্য চায়। এজন্য দুপক্ষই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে মরিয়া। এছাড়া আফ্রিকায় আল-কায়েদা ও দায়েশ হটাতেও কাজ করছে মরক্কো ও আলজেরিয়া। লিবিয়া থেকে সাহারা ও দক্ষিণে চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো যাতে অস্ত্রের চালান না পায় সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ওই দুই দেশও কাজ করে আসছিল। এখন মরক্কো ও আলজেরিয়ার মধ্যে বন্ধুত্ব আগের মতো নেই। যুক্তরাষ্ট্রও আফ্রিকায় একা হয়ে পড়ছে। উত্তর আফ্রিকায় আমেরিকার উপস্থিতি এখন ভারসাম্যহীন।

এদিকে লিবিয়া থেকেও মার্কিন কর্তৃত্ব বিলীন হতে চলেছে। দেশটিতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যে শান্তি-স্থাপন প্রচেষ্টা চলছিল বিরোধপূর্ণ স্বার্থের মধ্যে পড়ে তা কিছুটা হলেও এখন ম্রিয়মান। আগামী ডিসেম্বরে যদি দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হয় তাহলে গৃহযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়বে আবার। বাইডেন প্রশাসন স্বাভাবিকভাবেই চাইবে না লিবিয়ায় আরও এক দশক সামরিক ও অর্থনেতিক উপস্থিতি থাকুক। এখান থেকেও মার্কিন প্রভাব-প্রতিপত্তি শূন্যের দিকে ধাবমান।

সুদান থেকে সোমালিয়া, লেভান্ট এবং উপসাগরীয় অঞ্চলেও যুক্তরাষ্ট্র একই পরিস্থিতির মুখোমুখি। এসব অঞ্চলেও মার্কিন স্বার্থ দ্রুত স্থায়ীত্ব হারাতে বসেছে। ইরানের প্রভাব প্রতিপত্তি দমন এবং বিশ্বব্যাপী অভিন্ন স্বার্থ বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র মিত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে সৌদি আরব, ইরাক, জর্ডান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। এসব অঞ্চলে মার্কিন উপস্থিতি যে কাউকে স্বীকার করতে হবে। কিন্তু এসব স্থান থেকেও আস্তে আস্তে সৈন্য, বিমান এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.