ব্লিংকেনকে ‘প্রতিশ্রুতি’ দেয়ার পরদিনই পালিয়ে যান ঘানি

আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছিলেন, তিনি মৃত্যুর সাথে লড়তে প্রস্তুত। অথচ পরের দিন কাবুলে তালেবানের প্রবেশের খবর পেয়েই দেশ ছাড়েন তিনি। বুধবার টুইটারে দেশ ছেড়ে পালানোর ব্যাপারে আফগান জনগণের কাছে কৈফিয়ত দেন ঘানি। তারই প্রেক্ষিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেয়া প্রতিশ্রুতির বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।

আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি

আশরাফ ঘানি টুইটারে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, জনগণকে পরিত্যাগ করা তার উদ্দেশ্য ছিল না। বরং কাবুলসহ দেশের পথে পথে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের ঝুঁকি এড়াতে এবং প্রাসাদের নিরাপত্তার লক্ষ্যেই ১৫ আগস্ট সরে এসেছিলেন। তিনি বলেন, কাবুল ত্যাগ করা আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু আমার ধারণা ছিল, এটিই ছিল বন্দুকগুলোকে শান্ত রাখা এবং কাবুল ও লাখ লাখ নাগরিককে বাঁচানোর একমাত্র উপায়।

এ সময় তিনি আবারো রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে লাখ লাখ টাকা চুরি করার কথা অস্বীকার করেন। বলেন, এক্ষেত্রে তিনি নির্দোষ প্রমাণে তদন্তের জন্য প্রস্তুত আছেন। মূলত তাজিকিস্তানে নিযুক্ত সাবেক আফগান রাষ্ট্রদূত জহির আকবার এই অভিযোগের সূত্রপাত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আশরাফ ঘানি দেশ ছাড়ার সময় তার সাথে প্রায় ১৭ কোটি ডলার নিয়ে গেছেন।

কাবুলের প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে তালেবান সদস্যরা

বর্তমানে আবুধাবিতে অবস্থান করা আশরাফ ঘানি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তার পূর্বসূরিদের মতো তিনিও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনতে পারেননি। তিনি বলেন, আমি গভীর দুঃখের সাথে জানাচ্ছি, আমার অধ্যায়টি আমার পূর্বসূরিদের মতো অবস্থাতেই শেষ হয়েছে। অন্যভাবে শেষ করতে না পারায় আমি জনগণের কাছে ক্ষমা চাইছি।

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সেনা প্রত্যাহার শুরু করায় মে মাসে তালেবান যোদ্ধারা দেশের বিভিন্ন গ্রাম-শহর দখল করে নিতে থাকে। আগস্টে এসে তারা বিভিন্ন প্রাদেশিক রাজধানী দখল করতে শুরু করে। অবশেষে গত ১৫ আগস্ট তারা কাবুল দখল করে প্রায় পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়।

মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যমতেও তালেবানের এত দ্রুত কাবুল দখল করে নেয়ার কোনো ইঙ্গিত আসেনি। আফগান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, আফগানিস্তান থেকে পালানোর আগের রাতে ঘানি তাকে বলেছিলেন, তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু এরপরই তিনি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে দেশ ছেড়ে চলে যান। এর ফলে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিরাপত্তা বাহিনী ভেঙে পড়ে এবং সরকারেরও পতন হয়।

সূত্র: আলজাজিরা