ই-কমার্স: যেসব মতামত দিলেন ৪ মন্ত্রী

ইভ্যালিসহ বেশ কিছু দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থাও নিয়েছে সরকার। এমন প্রেক্ষাপটে এই খাত নিয়ে আজ বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি পর্যালোচনা সভা হয়।

ই-কমার্স, ফাইল ছবি

এতে অংশ নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেছেন খাত সংশ্লিষ্ট সরকারের ৪ জন মন্ত্রী। তারা হলেন- বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ই-কমার্স বন্ধ না করে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করতে আইন করার তাগিদ দেন তারা সবাই।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গোটা বিশ্বে ই-কমার্স চালু রয়েছে, এ খাতে লাখ-লাখ মানুষ জড়িয়ে পড়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে বাণিজ্য চলবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। করোনাকালে ই-কমার্স বেশ সুনাম কুড়িয়েছে, মানুষ উপকার পেয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অসততা ও প্রতারণার জন্য সব ই-কমার্স বন্ধ করা ঠিক হবে না।

চার মন্ত্রীর মতামত নিয়ে বৈঠক

ই-কমার্স সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনায় একটি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিবন্ধন দেয়ার পাশাপাশি ডিজিটাল বাণিজ্য কঠোরভাবে মনিটরিং করবে এই নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ভবিষ্যতে এমন প্রতারণা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

সভায় আইন, বিচার ও সংসদমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, কম দামে পণ্য পেতে চাওয়াটাই বাস্তবতা। এ ক্ষেত্রে প্রতারণার বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। মানুষের দেয়া টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য সহযোগিতা করা প্রয়োজন। আইনের আওতায় এনে ই-কমার্সে শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে।

ই-ব্যবসার জন্য জামানত রাখার ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, ব্যবসা বাড়ার সঙ্গে জামানতও বাড়বে। এই খাত মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। কেউ যাতে প্রতারণা করতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

ইভ্যালি, ফাইল ছবি

দেশীয় ই-কমার্সের বিরুদ্ধে অনেকে প্রতারণার অভিযোগ করেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, খাতটি পরিচালনায় একটি আইন করা দরকার। কেউ যাতে প্রতারিত না হয়, সে জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। এ জন্য একটি প্লাটফর্ম গঠন করা যেতে পারে।

সভায় ই-কমার্সে প্রতারণার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এ জন্য সামাজিকমাধ্যমসহ প্রচার মাধ্যমকে কাজে লাগাতে হবে। মানুষ সচেতন হলে প্রতারণার সুযোগ কমে আসবে। এ ছাড়া নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠন করে তদারকি জোরদার করার পাশাপাশি আইনও করতে হবে।

এ সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, র‌্যাব প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আইসিটির অতিরিক্ত সচিব রীনা পারভীন, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মেজবাউল হক-সহ সংশ্লিষ্ট কমকর্তারা।