বন্ধুর বন্দরে মাদকের বিশাল চালান, বিপাকে মোদি

ভারতের গুজরাট রাজ্যের মুন্দ্রা বন্দর থেকে কয়েকদিন আগে প্রায় ৩০০০ কেজি হেরোইনের একটি চালান আটক করা হয়। বন্দরটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বন্ধু এবং আদানি গ্রুপের মালিক গৌতম আদানি কর্তৃক পরিচালিত। এছাড়া বন্দরটিতে নরেন্দ্র মোদির অংশীদারিত্ব রয়েছে বলেও জানা গেছে। এমতাবস্থায় এই বন্দর থেকে বিশাল পরিমাণ মাদক আটকের এ ঘটনায় মোদির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না আসায় বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হেরোইনের চালানটি আফগানিস্তান থেকে দুটি কনটেইনারের মাধ্যমে সেই বন্দরে পাঠানো হয়।

মোদির নির্বাচনী এলাকা গুজরাটের বাসিন্দা গৌতম আদানি দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ কার্গো পরিবহনের মালিক। তিনি সাতটি উপকূলীয় রাজ্য- গুজরাট, মহারাষ্ট্র, গোয়া, কেরালা, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু ও ওড়িশার ১৩টি অভ্যন্তরীণ বন্দরও পরিচালনা করেন।

গুজরাতের মুন্দ্রা বন্দর, ফাইল ছবি

এদিকে ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, মুন্দ্রা বন্দরে মোদির ২৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এ অবস্থায় বন্দরটি থেকে এ মাদক উদ্ধার এবং সে বিষয়ে মোদির কোনো বক্তব্য না আসায় তার দিকে আঙ্গুল তুলেছেন সমালোচকদের একটি অংশ। তাদের দাবি, দেশে মাদকের চোরাচালান এসব কারণেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মুন্দ্রা বন্দর থেকে হেরোইন বাজেয়াপ্ত করার বিষয়টি নিয়ে আদানি গ্রুপ ও মোদি সরকারকে লক্ষ্য করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়। রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকদের কেউই এক্ষেত্রে মোদি সরকারকে ছেড়ে কথা বলেননি।

কংগ্রেসও বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করে, কিভাবে এই ধরনের একটি মাদক সিন্ডিকেট সরকারের নাকের ডগায় কাজ করছে? তারা এই অভিযোগ আনেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর বিরুদ্ধেও।

কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদদ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উভয়েই গুজরাটের হওয়া সত্ত্বেও তারা কেন এই মাদক সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছেন না?

আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভারতে মাদকের চোরাচালান গত কয়েক বছরে যথেষ্ট বেড়েছে, 'এটি শুধু ভারতের তরুণদের ভবিষ্যৎকেই ধ্বংস করবে না, বরং এটি বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো সম্ভাব্য অর্থায়নের পথও।'

তেলেগু দেশম পার্টির নেতা, ধুলিপল্লা নরেন্দ্র কুমার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অবৈধ মাফিয়ার কেন্দ্রস্থল হিসেবে আবির্ভূত হওয়া ভারতের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। সরকার ও শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সমর্থন ছাড়া এসব রাজ্যে আন্তর্জাতিক মাদক ও ইউরেনিয়াম মাফিয়ার পক্ষে কোনোভাবেই কাজ করা সম্ভব নয়।