এরদোয়ানের সাফ কথা: এক পা-ও পেছানো সম্ভব নয়

ওয়াশিংটনের সঙ্গে আঙ্কারার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান। কিন্তু তার পরও যে কারণে সম্পর্কের এই অবনতি, সেই এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনা থেকে এক পা-ও পেছানো সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চলমান ৭৬তম বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। দেশটির সংবাদ মাধ্যম ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে, নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এমন মন্তব্য করেছেন। রাশিয়া থেকে এস-৪০০ কেনা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে।

তুর্কি নেতা বলেন, সত্যি কথা বলতে কি— যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক যে ভালো যাচ্ছে, সেটা আমি বলতে পারছি না। তাদের কাছ থেকে আমরা এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনেছি এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পরিশোধও করেছি। অথচ এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে বিমানগুলো হস্তান্তর করেনি ওয়াশিংটন। রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার ‘অজুহাত’ তুলে যুদ্ধবিমানগুলো আমাদেরকে দিচ্ছে না তারা।

রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ হাতে পেয়েছে তুরস্ক, ফাইল ছবি

সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, এস-৪০০ ইস্যুতে ওয়াশিংটন সার্বক্ষণিক আঙ্কারার ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে, যেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার ব্যাপারে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। সেখান থেকে এক পা-ও পিছিয়ে আসা সম্ভব নয়।

উল্লেখ্য, এস-৪০০ ব্যবস্থা কেনা নিয়ে তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে চুক্তি সই হয়। সামরিক জোট ন্যাটোর হয়েও এই ব্যবস্থা কেনায় আপত্তি জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে আঙ্কারা-ওয়াশিংটন তীব্র টানাপোড়েন চলছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র বিরোধিতাকে উপেক্ষা করে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ব্যবস্থার প্রথম চালান গ্রহণ করে তুরস্ক।

ওয়াশিংটনের দাবি, তুরস্ক যদি এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করে তাহলে এর সূত্র ধরে ন্যাটো জোটের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গোপন তথ্য জেনে যেতে পারে রাশিয়া। আর সেটা হলে ন্যাটোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে। অবশ্য তুরস্ক এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। অপরদিকে, এই ব্যবস্থা কেনার কারণে তুরস্ককে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেয়া আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এ ব্যাপারে চুক্তির পর অর্থ পরিশোধ করেছে আঙ্কারা।