এরদোয়ান-পুতিন বৈঠক ঘিরে সিরিয়ায় নতুন উত্তেজনা

রাশিয়ার সোচিতে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়েপ এরদোয়ান ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন দু’একদিনের মধ্যে। এ উপলক্ষে সিরিয়ায় দু’দেশের সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তুরস্ক সিরিয়ায় নতুন করে হাজার হাজার সেনা পাঠিয়েছে। ওদিকে রাশিয়া সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিমান হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আগমুহূর্তে নড়েচড়ে বসেছে দেশ দুটির কর্তৃপক্ষ।

এরদোয়ান ও পুতিন, ফাইল ছবি

বার্তা সংস্থা রয়টার্স স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রোববার সিরিয়ার আফরিন শহরের কাছাকাছি গ্রামে রুশ জোট বিমান থেকে গুলি ও বোমা হামলা করেছে। তুর্কি সমর্থিত বিদ্রোহীদের শহর ও গ্রামে এই বিমান হামলা গত এক সপ্তাহ ধরে বেড়েই চলেছে।

রাশিয়ার বিমান অভিযান সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশের জাবাল আল জাওয়া থেকে উত্তর-পশ্চিমে আফরিন পর্যন্তত বিস্তৃত হয়েছে। যা তুর্কি সীমান্তের কাছে অবস্থিত এবং এক সময় সম্পূর্ণ কুর্দিদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের সহায়তায় সিরিয়ার সেনা ফাঁড়ি থেকেও গুলি করা হয়েছে।

তুর্কি সমর্থিত বিদ্রোহী বাহিনী ন্যাশনাল আর্মির মুখপাত্র মেজর ইউসুফ হামাউদ বলেন, রাশিয়ার হামলা এই সপ্তাহে তীব্র হয়েছে এবং ইদলিব প্রদেশ থেকে তা শুরু হয়ে সীমান্তবর্তী উত্তর আলেপ্পো প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।

আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত কুর্দি সশস্ত্র যোদ্ধাদের মোকাবেলায় গত পাঁচ বছরে তুরস্ক সিরিয়ায় হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। তুরস্ক সিরিয়ার সরকার বিরোধী ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে কাজ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে, আর রাশিয়া এবং সিরিয়া তাদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের জন্য সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমে নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করারও চেষ্টা করছে তুরস্ক।

আঙ্কারার দাবি, তুর্কি সৈন্যরা স্থানীয় জনগণকে রক্ষা এবং সন্ত্রাসবাদ বিরোধী গোষ্ঠীকে সমর্থন করার জন্য এই অঞ্চলে অবস্থান করছে। যদিও তুরস্ক সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে, তবুও আঙ্কারা যুদ্ধবিরতি বহাল রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চেষ্টা করছে। তুরস্কে সিরিয়ার শরণার্থীদের ঢল বন্ধ করতে রাশিয়ার সাথে একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে পাওয়ারও আশা করছে আঙ্কারা।

রোববার, ২৬ সেপ্টেম্বর, সিবিএস নিউজে এক সাক্ষাৎকারে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আভাস দিয়েছিলেন চলতি মাসের শেষ দিকে তিনি পুতিনের সাথে বেঠক করবেন। বৈঠকে রাশিয়ার কাছ থেকে আবারও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আমদানির ব্যাপারে কথা হবে। এর মধ্যেই সিরিয়ায় বিমান হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। তুরস্কও নিজের উপস্থিতি জানান দিতে সিরিয়ায় নতুন করে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করল।