যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েন, রাশিয়ায় ঘেঁষছে তুরস্ক

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানরা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। এর অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করতে আগ্রহী ছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান। আঙ্কারার এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি বাইডেন নাকচ করে দেয়ায় শেষ পর্যন্ত একসঙ্গে বসা হয়নি এই দুই নেতার।

জো বাইডেন, রিসেপ তায়্যিপ এরদোয়ান ও ভ্লাদিমির পুতিন, ফাইল ছবি

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এরদোয়ান বলেছেন, আগের মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সঙ্গেই কাজ করা সম্ভব হলেও বাইডেনের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ এখনো হয়নি। পরের দিন তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের ভুল বুঝাবুঝি দূর করতে আলোচনায় বসতে চান না বাইডেন। এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হতাশায় পরিণত হয়েছে। কুর্দি বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে সন্ত্রাসবাদের মদদদাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এরপরই তুর্কি গণমাধ্যমগুলো জানায়, রাশিয়ার তৈরি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০-এর দ্বিতীয় ব্যাচ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে তুরস্ক। এই খবর প্রকাশের পরই নড়েচড়ে বসে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ককে ‘ভয়াবহ শাস্তি’র হুমকি দেয় দেশটির পররাষ্ট্র বিষয়ক সিনেট কমিটি। আঙ্কারার উদ্দেশে ওয়াশিংটন বলেছে, এস-৪০০ এর আর কোনো অস্ত্র কিনলে নতুন করে অবরোধ আরোপ করা হবে।

তুরস্কে এস-৪০০, ফাইল ছবি

কাতার-ভিত্তিক আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এমন হুমকি এর আগেও দেয়া হয়েছিল, তাতে কান দেননি এরদোয়ান। এবারও তিনি একই পথে হাঁটবেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, দেশ দুটি ন্যাটোর সদস্য হলেও এস-৪০০ কেনা নিয়ে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে, যা আগামীতে উন্নতির বদলে খারাপের দিকেই যেতে পারে। এই ধারণা হালে পানি পাওয়ায় রাশিয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে তুরস্ককে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা এরদোগান বলছেন, তার সঙ্গে সততার ভিত্তিতে দারুণ কার্যকর সম্পর্ক রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, এরদোয়ান-পুতিনের সম্পর্কের রসায়ন। বাইডেনের উপেক্ষার জবাব দিতে কৃষ্ণ সাগরের সোচিতে এই দুই নেতা বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তুরস্ক-রাশিয়া সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।