তাইওয়ান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের শাস্তি দিতে আইন কঠোর করবে বেইজিং?

চীনে আইন প্রয়োগ করে তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী রাজনীতিবিদদের টার্গেট করার চেষ্টা চীন-তাইওয়ান উপকূলে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। আইন প্রণয়ণের নির্দিষ্ট সময়সীমা না থাকলেও বেইজিং বলেছে, গত বছর তাইওয়ানের ‘বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী’ ও তাদের অর্থের যোগানদাতাদের একটি কালো তালিকা তৈরি করা হয়েছে। মার্কিন স্টেট সেক্রেটারি মাইক পম্পেও ‘তাইওয়ান চীনের অংশ নয়’ ঘোষণা দেওয়ার পরই এই তালিকা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তাইপেকে ওয়াশিংটনের কাছাকাছি না যাওয়ার সতর্ক করছে চীন।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট তেসাই ইঙ-ওয়েন

তাইওয়ান উপকূলে এ বছরের শুরু থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশেষত কয়েক সপ্তাহ ধরে চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মি উপকূল বরাবর ১৫০টি সামরিক বিমানের মহড়া চালিয়েছে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও স্বশাসিত বদ্বীপকে হুঁশিয়ারি করে বলেছেন, বেইজিংয়ের পুনর্মিলনের জন্য ‘বড় বাঁধা’ তাইওয়ান। ইতিহাস এর বিচার করবে।

তবে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট তেসাই ইঙ-ওয়েন জোর দিয়ে বলেছেন, তাইওয়ান মূল ভূখণ্ডের অধীনস্থ হবে না। শি জিনিপিংয়ের কথার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে তাইওয়ান বিষয়ক অফিসের মুখপাত্র মা জিয়াংগুয়াংয়ের কথায়। তিনি বলেছেন, দ্বীপে বাস্তবিক পদক্ষেপ নিতে বেইজিং মৌখিক হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

গবেষকরা বলছেন, বেইজিং সেই কালো তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের কারও নাম প্রকাশ করেনি। তবে আইন প্রয়োগ করে এসব ব্যক্তির শাস্তির ব্যবস্থা নিচ্ছে। ফুজিয়ান প্রদেশের মিন্নান নরমাল ইউনিভার্সিটির গবেষক ওয়াং জিয়ানমিন বলেছেন, চীনা প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি বেইজিংয়ের পদক্ষেপকে প্রভাবিত করেছে। তারা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের শাস্তি ও জবাবদিহি করতে আইনের আশ্রয় নিচ্ছে।

ন্যাশনাল সোসাইটি অব তাইওয়ান স্টাডিজের সদস্য ঝেং জিয়ান বলেন, ‘শাস্তির এই হুমকি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যুক্তরাষ্ট্রে কাছে না যাওয়ার সতর্ক করছে।’ তাইওয়ান দ্বীপে অস্ত্র সরবরাহকারী প্রধান দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং গত বছর মার্কিন বাহিনী তাইওয়ান সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

ঝেং বলেন, ‘এখন যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে কৌশলগত প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তাইওয়ান বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দেশটিকে বিদেশিদের সঙ্গে ভাগাভাগি করছে। তাহলে আপনাকে (বিচ্ছিন্নতাবাদীদের) শাস্তি না দিলে আর কাকে শাস্তি দেবে?’

এই অঞ্চলের ভৌগলিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই কালো তালিক করা হয়েছে চীনের বিদ্যমান বিচ্ছিন্নতাবাদবিরোধী আইন, অপরাধ আইন ও জাতীয় নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী। এসব আইন দ্বারা সকল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভিযুক্ত করা সম্ভব এবং যাবজ্জীবন জেল হতে পারে। বিচ্ছিন্নতাবাদবিরোধী আইনটি পাস করা হয় ২০০৫ সালে যা তাইওয়ানে বেইজিংয়ের নীতি বাস্তবায়নের বৈধতা দিয়েছে।

সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট