কার্বন অভিশাপে নিজেই ডুবতে বসেছে চীন
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কয়লানির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থার অনুসারী চীন। বিশ্ব বাণিজ্যে একচ্ছত্র আধিপত্য পেতে তারা এ পন্থা বেছে নিয়েছে। তাদের এই উচ্চাভিলাষী নীতির কারণেই কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে চলেছে। বিশ্বের এক নম্বর কার্বন নিঃসরণকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে তারা।
কার্বন নিঃসরণের প্রাথমিক উৎস হলো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ছবি-রয়টার্স
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক এনার্জি এজেন্সির মতে, চীন একাই এক-চতুর্থাংশ কার্বন নিঃসরণ করে থাকে। চীনের মূল লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের শক্তি উৎপাদনের ২৫ শতাংশ আসবে জীবাশ্ম (ফসিল জাত) নয় এমন জ্বালানি থেকে। ‘বিশ্ব দখলের’ এই কার্বন-অভিশাপে শেষ পর্যন্ত নিজেই ডুবতে বসেছে চীন।
খুব বেশি দিন নয়, জুলাইয়ের ঘটনা। চীনের হেনান প্রদেশে বন্যাকবলিত হয়ে মারা গেছে কমপক্ষে ৩০০ জন। আহত এবং নিখোঁজ হয়েছেন বহু মানুষ। প্রদেশ কর্তৃপক্ষের হিসাব মতে, এ বন্যায় ২০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে তাদের। প্রদেশটিতে এখন খাদ্যের জন্য হাহাকার চলছে।
দেশ ও দেশের বাইরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে চীন
এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, সমতল কৃষিজমিগুলো এখনও কয়েক ইঞ্চি পানির তলায় রয়েছে। চোখের পানিতে ভাসছে কৃষক, ক্ষুধায় কাতর তার সন্তানেরা। দৃশ্যটি অবতারণার কারণ একটাই, জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু সংকটের দায় চীন সরকারের। কার্বন উচ্চাভিলাষের কারণেই ধুঁকছে চীন, আর ভুগছে চীনের সাধারণ মানুষ।
হেনান প্রদেশের কৃষক ওয়াং বলেন, ‘সব চলে গেছে, কিছুই অবশিষ্ট নেই। গ্রীষ্মকালীন ফসল বন্যায় ভেসে গেছে। এখন নিচু জমিতে কোনো ফসল উৎপাদনের সুযোগ নেই। অক্টোবরের শেষদিকে শীতকালীন গম রোপণের কথা ছিল, তাও পারছি না, জমিতে পানি থাকায়।’ গত ৪০ বছরে এমন বন্যা দেখেননি হেনানের কৃষকরা। বিশ্ব উষ্ণায়নই ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতার জন্য দায়ী বলে মনে করছেন তারা।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ুবিজ্ঞানী রিচার্ড সিগার বলেন, ‘বায়ুমণ্ডল উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাস আরও আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে, তাই ঝড়ের সময় বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়তে পারে।’ তিনি আরও বলেন ‘এ কারণেই মানব-সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এই গ্রীষ্মে চীন এবং ইউরোপের মতো দেশের মানুষগুলো চরম বন্যা দেখেছেন।’ চীন বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ। ২৮% কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের জন্য দায়ী তারা, যা পৃথিবীকে উত্তপ্ত করতে ভূমিকা রাখছে।
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বনেতারা অংশগ্রহণ করেছেন। সেখানে জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার জন্য আরও উচ্চাভিলাষী সময়রেখা নির্ধারণ না করার জন্য চীনের সমালোচনা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চলতি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেননি। বদলে জলবায়ু সম্মেলনে একজন অভিজ্ঞ আলোচককে পাঠিয়েছে চীন।
চীনের প্রতিনিধি বলেছেন, দেশের কার্বন নিঃসরণ ২০৩০ সালের আগে বন্ধ হয়ে যাবে। সমালোচকরা বলছেন, এত তাড়াতাড়ি এটা ওদের পক্ষে সম্ভব হবে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, কার্বন নিঃসরণ তথা গ্রিন হাউসের প্রভাবে বাড়ছে বিশ্ব উষ্ণায়ন। এর প্রত্যক্ষ প্রভাবে সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে। সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, হিমবাহের বরফ গলা এবং বরফের ধস নামার কারণে পৃথিবীর ৪১ কোটি মানুষ ডুবে যাবে মাত্র ৮০ বছরের মধ্যে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.