ভারতের ভেতরে তৈরি স্থাপনা গ্রাম নয়, চীনা সেনা শিবির!

ভারতের অরুণাচল প্রদেশের ভেতরে ঢুকে চীন আস্ত একটি গ্রাম বানিয়েছে বলে দাবি করা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক রিপোর্টে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) সংলগ্ন বিতর্কিত ওই এলাকায় বানানো স্থাপনা চীনা স্থায়ী সেনা শিবির বলে জানিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এমন দাবি করেছেন প্রদেশটির আপার সুবনসিরি জেলার অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার ডিজে বোরাহ।

অরুণাচলে চীনের সেই গ্রাম

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, গত বছর দায়িত্ব দেয়া ডিজে বোরাহ সম্প্রতি পর্যবেক্ষণ করে জানান, পেন্টাগন যেটিকে জনবসতি বলেছে, সেটি আসলে চীনা সেনাদের একটি স্থায়ী শিবির। সেখানে কোনো বেসামরিক লোকজনের অবস্থান নেই বলেই ধারণা তার।

ওই এলাকায় চীনা একাধিক বড় স্থাপনা দেখা গেছে উল্লেখ করে ভারতীয় এই কর্মকর্তা জানান, সেগুলো সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এর আগে ১৯৬২ সালে অঞ্চলটি দখলের পর কয়েকটি চৌকি স্থাপন করেছিল চীনা সেনারা। তবে এবার যেখানে তারা স্থাপনা নির্মাণ করেছে, সেখানে ভারতীয় সেনা চৌকি ছিল আগে, যা ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর সরিয়ে নেয়া হয়।

২০১৯ ও ২০২০ সালের দুটি স্যাটেলাইট ইমেজ

খবরে বলা হয়, ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওই অঞ্চলের সম্পূর্ণ জমির মালিকানা এবং একচেটিয়া অধিকার ছিল তাগিন সম্প্রদায়ের। ১৯১৪ সালে ম্যাকমোহন লাইনের মাধ্যমে নাগা সম্প্রদায়ের মতো এই সম্প্রদায়ও বিভক্ত হয়ে যায়।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারত দাবি করেছিল, এলওসি লঙ্ঘন করে ভারতের আওতাধীন অরুণাচল প্রদেশের উত্তর সুবনসিরি জেলায় চীনের সেনাবাহিনীর সদস্যরা একটি গ্রাম তৈরি করে ফেলেছে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসেনি।

সম্প্রতি আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের বার্ষিক রিপোর্টেও একই দাবি করা হলে ভারত নড়েচড়ে বসেছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে ভারত-চীনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের রিপোর্টে। এতে চীনের সামরিক প্রস্তুতি ও ভূমি আগ্রাসন নিয়ে বিস্তৃত ব্যাখ্যা দেয়া হয়।

শিগগিরই মার্কিন কংগ্রেসে জমা পড়তে যাওয়া সেই রিপোর্টে আরো বলা হয়, চীনের স্বায়ত্তশাসিত তিব্বতের অংশ এবং অরুণাচলের পূর্বাঞ্চলের বিতর্কিত জমিতে গ্রামটি বানানো হয়েছে। ২০২০ সালে তৈরি করা গ্রামটিতে অন্তত ১০০টি বাড়ি রয়েছে।