ফিলিস্তিনি তহবিলে ৫০ শতাংশ বরাদ্দ কমাল ব্রিটেন

ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থায় অর্থায়ন ৫০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে ব্রিটেন। ২০২০ সালে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থায় (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রায় ৫৭ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল দেশটি। তবে ২০২১ সালে অর্থায়নের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ২৮ মিলিয়নে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা

ইউএনআরডব্লিউএ কমিশনার ফিলিপ লাজারিনি এই অর্থায়ন কমার পেছনে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রণীত বিতর্কিত পাঠ্যক্রমকে দায়ী করেছন। তিনি বলেন, পাঠ্যক্রমে ইহুদি বিদ্বেষ থাকার কারণে প্রায়ই জাতিসংঘের এই সংস্থাটি পৈশাচিক রাজনীতির শিকার হয়।

লাজারিনির মতে, ২০২০ সালে যুক্তরাজ্য ইউএনআরডব্লিউএ-র তৃতীয় বৃহত্তম দাতা দেশ ছিল। ২০২১ সালে এসে জাতিসংঘের সংস্থাটি অত্যন্ত দুর্বল অবস্থানে চলে আসে। গত মাসে যুক্তরাজ্য সংস্থাটির তহবিলে অর্থায়ন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

ফিলিস্তিনি তহবিলে ৫০ শতাংশ বরাদ্দ কমাল ব্রিটেন

গার্ডিয়ানের খবরে বলা হচ্ছে, ইউএনআরডব্লিউ এর পাঠ্যক্রমের বিষয়টি চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রকাশ্যে আসে। একটি প্রতিবেদনের ফলাফলে জানা যায়, সংস্থাটির পাঠ্যক্রমে ঘৃণা চর্চার বিষয়টি রয়ে গেছে। যার মধ্যে রয়েছে ইহুদি বিদ্বেষ, জিহাদ ও সহিংসতার জন্য উস্কানিমূলক কনটেন্ট। এটি জাতিসংঘের মূল্যবোধের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। এটি শান্তি ও সহনশীলতার শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। অবশ্য লাজারিনি বিষয়গুলো স্বীকার করেছেন।

জুন মাসে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক সংসদীয় আন্ডার সেক্রেটারি অফ স্টেট জেমস ডুড্রিজ নিশ্চিত করেছেন যে, সংস্থাটির পাঠ্যসূচিতে এখনও ইসরায়েল ও ইহুদিবিরোধী উপাদান রয়েছে। এমন পরিস্থিতি যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

একই মাসে কংগ্রেসনাল কমিটির সামনে বক্তৃতাকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় ইউএনআরডব্লিউতে সংস্কার হোক। বিশেষ করে আমরা সংস্থাটির পাঠ্যক্রমে সংস্কার চাই, যা ইসরায়েল বা ইহুদি বিদ্বেষী মনোভাব সৃষ্টি করে।

এর আগে একই কারণে এপ্রিলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে জাতিসংঘের এই সংস্থাটির নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও এই বছর সংস্থাটির পাঠ্যপুস্তকগুলোতে ঘৃণা ও ইহুদি-বিদ্বেষের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।

ইমপ্যাক্ট এসই এর সিইও মার্কাস শেফ বলছেন, অবশ্যই এর সুস্পষ্ট প্রতিকার হতে হবে ঘৃণা দূর করা। অন্যকে উস্কানি ও দোষারোপ করার পরিবর্তে শান্তি ও সহনশীলতার পাঠ্যক্রম তৈরি করা। তার অভিযোগ, সংস্থাটির হাতে এ পরিবর্তন আসবে না, কারণ তাদের শিক্ষকরাই ঘৃণা চর্চায় লিপ্ত।