জলবায়ু সংকটে নারী-পুরুষের বেড়াজাল

জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জলবায়ু জরুরি অবস্থার কারণে বাস্তুচ্যুতদের ৮০ শতাংশই নারী। এ জন্য জলবায়ু সংকট উত্তরণে নারীর ক্ষমতায়ন দাবি করেছেন বিশ্বের কয়েকজন নারী নেত্রী। মঙ্গলবার কপ২৬ সম্মেলনে লিঙ্গ সমতায়ন দিবসের বিশেষ সেশনের বক্তব্যে এ দাবি করেন তারা।

জলবায়ু পরিবর্তনে নারী ও পুরুষের বেড়াজাল

দ্য গার্ডিয়ান বলছে, এদিন লিঙ্গ সমতার ওপর ফোকাস করে বক্তব্য দেন স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন, মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারী নেত্রীরা। পেলোসি বলেন, আমি যদি বিশ্ব শাসন করতাম, তবে আমি নারী শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতাম। কারণ নারীরা সফল হলেই পৃথিবী সফল।

বলিভিয়ার প্লুরিন্যাশনাল অথরিটি ফর মাদার আর্থের নির্বাহী পরিচালক অ্যাঞ্জেলিকা পন্স বলেন, পুরুষের ডিজাইন করা পৃথিবী অনেক কিছুকে ধ্বংস করেছে। বিশ্বের নারীদের মতো চিন্তা করা শুরু করা উচিত। বিশ্ব বিনির্মাণের ডিজাইন নারীদের দিয়ে করা হলে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনে নারী ও পুরুষের বেড়াজাল

স্টার্জন বলেন, গত সপ্তাহে শুরু হওয়া বিশ্বনেতাদের এ সম্মেলনে নারীরা সংখ্যালঘু। এই মানসিকতা ও সিস্টেমে পরিবর্তন আনতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন একটি নারীবাদী সমস্যা। এ কারণে আমরা নারীর ক্ষমতায়ন দাবি করছি।

ব্রিটিশ মন্ত্রী এবং কপ২৬-এর সভাপতি অলোক শর্মা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আমাদের প্রচেষ্টা থেকে আমরা বুঝতে পারি, নারীদের এই প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখলে এটি আরও বেশি কার্যকর হয়।

মালালা তহবিলের প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, জলবায়ু সম্পর্কিত ঘটনাগুলো নিম্ন আয়ের দেশগুলোর অন্তত ৪০ লাখ নারী বা মেয়েকে ২০২১ সালের শিক্ষা শেষ করা থেকে বঞ্চিত করেছে। এ প্রবণতা অনুসারে, জলবায়ুু সংকট প্রতি বছর কমপক্ষে সোয়া কোটি নারী বা মেয়ে তাদের শিক্ষা শেষ করতে পারে না। এটা সম্পূর্ণ প্রতারণা এবং বিপজ্জনকও। তিনি ঘোষণা করেছেন, লিঙ্গ বৈষম্য দূর করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ১৬৫ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ করছে ব্রিটিশ সরকার।

সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রী পের ওলসন ফ্রিড, কপ২৬-কে বলেন, ‘নারীরা এই বিশ্বের দূষণকারী নয়, তবুও জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি তাদের কাঁধে। লিঙ্গ সমতায়ন ছাড়া টেকসই সবুজ পরিবর্তন আসবে না।