আপনি পড়ছেন

যমযমের পানি পৃথিবীর পবিত্রতম পানি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, এটি মুবারক পানি, ক্ষুধা নিবারক খাদ্য এবং রোগের শেফা। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবসময় যমযমের পানি সঙ্গে রাখতেন। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায়, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের সাথে থাকা পাত্রে এবং মশকে যমযমের পানি বহন করতেন। তিনি এই পানি অসুস্থদের ওপর ছিটিয়ে দিতেন এবং তাদের পান করাতেন। (তিরমিজি, তারিখুল কবির, বায়হাকি)।

zamzam well

যমযম কূপ পবিত্র কাবার দ্বারপ্রান্তে অবস্থিত। আল্লাহপাকের আশ্চর্যজনক সৃষ্টির এক মহানিদর্শন কুদরতময় এই যমযম কূপ, যার পানি কখনো নিঃশেষ হয় না। আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইবরাহীম (আ.), বিবি হাজেরা ও পুত্র ইসমাঈলকে মক্কার বিজন মরুভূমিতে রেখে আসেন। এরপর তাঁর রেখে যাওয়া সামান্য খাদ্য ও পানীয় নিঃশেষ হয়ে গেলে দুগ্ধপোষ্য শিশু ইসমাঈল (আ.) তৃষ্ণায় ছটফট করছিলেন, এমতাবস্থায় হাজেরা (আ.) পানির সন্ধানে ব্যাকুল হয়ে পার্শ্ববর্তী সাফা-মারওয়ার পাহাড়দ্বয়ের মাঝে সাতবার ছোটাছুটি করছিলেন। এ সময় ক্রন্দনরত শিশুপুত্র ইসমাইল (আ) এর পায়ের আঘাতে মাটি ফেটে পানির ধারা বেরিয়ে আসে। ফিরে এসে হাজেরা (আ) এই দৃশ্য দেখে পাথর দিয়ে চারদিকে বাঁধ দিয়ে পানির ধারা আটকাতে লাগলেন। এভাবেই কূপের সৃষ্টি হয়।

আরবি ভাষায় যমযম অর্থ অঢেল পানি। আল্লাহ তা’লার অসীম কুদরতে যমযম কূপ ৪০০০ বছর পূর্বে সৃষ্টি হয়েছিল। প্রতিবছর হজ করতে যাওয়া হাজীগণ লাখ লাখ টন পানি পান করেন এবং সাথে নিয়েও আসেন। কিন্তু এর পানি কোনদিন ফুরিয়ে যায়নি বা শুকিয়েও যায়নি।

zamzam well 01

আল্লাহ তাআলা বরকতপূর্ণ যমযমের পানি পানকারীকে শারীরিক অসুস্থতা হতে হিফাজত করেন। ইসলামে খাবার খাওয়া ও পানীয় পান করার সময় বসে খাওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু যমযমের পানি পান করার বেলায়। মানে বরকতময় এ পানি দাঁড়িয়ে ক্বিবলামুখী হয়ে পান করা সুন্নত। তবে যমযমের পানি সাধারণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে-বসে দুভাবেই পান করা জায়েজ। সাধারন পানির তুলনায় যমযমের পানিতে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ সামান্য বেশী। এই কারণে যমযমের পানি পরিশ্রান্ত হাজীদের সতেজ ও সজীব করে তোলে। যমযমের পানি পানের বরকত ‍তুলে ধরা হলো-

যমযমের পানি পানকারীর মনের সকল চাওয়া আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পূরণ করে দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যমযমের পানি যে উদ্দেশ্য নিয়ে পান করা হবে তা পূরণ হবে। (হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু) (মুনসাদে আহমদ)।

হজরত আবু জর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যমযমের পানি বরকতময়, স্বাদ অন্বেষণকারীর খাদ্য এবং রোগীর ঔষধ।’ (তাবারানি, বাযযার)।

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ পানিকে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ পানি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জমিনের ওপর সর্বোত্তম পানি হলো যমযমের পানি। (তাবারানি কাবির, ইবনে হিব্বান)

zamzam well 02

যমযম কূপের পানি পৃথিবীর সমস্ত পানি থেকে স্বচ্ছ, উৎকৃষ্ট, পবিত্র ও বরকতময়। যমযমের পানির একটি সতন্ত্র স্বাদ অনুভুত হয় যা কেবল পানকারী অনুভব করতে পারে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, যমযমের পানির মাত্র এক ফোঁটা এক হাজার ফোঁটা সাধারণ পানিতে মেশানো হলে ওই পানিও যমযমের পানির বৈশিষ্ট্য অর্জন করে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর