হারামাইন হাই স্পিড ট্রেন, মরুভূমির উত্তাপেও আরামদায়ক

সৌদি আরবের হারামাইন হাই স্পিড রেলওয়ে ট্রেনটি চলে প্রতিঘণ্টা ৩০০ কিলোমিটার গতিতে। এটি বিশ্বের দ্রুততম গতি সম্পন্ন দশটি ট্রেনের একটি। এটি অত্যাধুনিক ও উচ্চগতির বৈদ্যুতিক ট্রেন। ট্রেনটি শ্বাসরুদ্ধকর তাপ এবং বালির ঝড় পেরিয়ে আপনাকে নিয়ে যাবে মরুভূমির মধ্য দিয়ে। এই রেলওয়ে পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনাকে সংযুক্ত করেছে। খবর সিবিএস ফিফটি এইট।

নজরকাড়া হারামাইন হাই স্পিড রেলওয়ে

৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১২২ ফারেনহাইট তাপমাত্রায় মরুভূমিতে ট্রেনটি বিশেষ প্রযুক্তিগতভাবে তৈরি। ৩৫টি স্প্যানিশ-নির্মিত ট্যালগো ট্রেন এ রুটে চলাচল করে। ৪৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে সময় নেয় মাত্র দুই ঘণ্টা।

প্রতিটি ট্রেনে ১৩টি করে বগি আছে, যেখানে ইকোনমি বা বিজনেস ক্লাসে ৪১৭ জন যাত্রী বসতে পারে। রেলওয়েটি বছরে ৬০ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহন করে। হজের সময় ট্রেনগুলোর মাধ্যমে ২০ মিলিয়নেরও বেশি মুসলমান শহরের পবিত্র স্থানগুলো পরিদর্শন করেন। ট্রেনলাইনটি ২০১৮ সালে চালুর পর থেকে এটি মদিনা এবং মক্কার মধ্যে ভ্রমণের একটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ট্রেনগুলো।

রেল প্রকল্পটি দুটি ধাপে সম্পন্ন কর হয়। প্রথম পর্যায় ২০০৯ সালে শুরু হয়েছিল। প্রথম ধাপের জন্য ১.৮ বিলিয়ন চুক্তি করা হয়, যেটি ২০০৯ সালের মার্চ মাসে আল রাজি অ্যালায়েন্সকে দেওয়া হয়েছিল এটির দায়িত্ব। অ্যালায়েন্স হল চীনা এবং সৌদি কোম্পানি চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আলস্টম ট্রান্সপোর্টের একটি কনসোর্টিয়াম।

আরব উপদ্বীপের প্রথম রেলপথ ছিল দামেস্ক থেকে মদিনা পর্যন্ত ১০৫০ মিমি গেজ হেজাজ রেলওয়ে। এটি ১৯০০ সালে নির্মাণ শুরু হয় এবং লাইনটি ১৯০৮ সালে আল মদিনায় পৌঁছে। মক্কা পর্যন্ত লাইনটি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু তা কখনও নির্মিত হয়নি। স্পষ্টতই এটি হজে তীর্থযাত্রীদের বহন করার জন্য তৈরি করা হয়।

ভাষ্যকাররা হেজাজ অঞ্চলকে অটোমান রাজত্বের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠভাবে আনার জন্য একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে দেখেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রেলওয়ের দক্ষিণ অংশের অনেকটা ধ্বংস হয়ে যায়। লাইনটি জর্ডানের সীমান্তে গিয়ে শেষ হয়, যা আজও পরিত্যক্ত। ট্র্যাকের কিছু পরিত্যক্ত অংশ এখনও রয়ে গেছে। মদিনা এবং মাদাইন সালেহ স্টেশনগুলো যাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত আছে। প্রতিটিতে কিছু লোকোমোটিভ এবং মূল রেলওয়ের রোলিং স্টক রয়েছে।