প্রধান বিচারপতির বিদায়ী সংর্বধনা, বর্জন করে বিক্ষোভ বিএনপিপন্থীদের

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বিদায়ী সংবর্ধনা বর্জন করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। একই সঙ্গে তারা বিক্ষোভ ও পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আজ বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, এ বিক্ষোভ করেন। পরে আইনজীবী সমিতির ৩ নম্বর হলে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন

এ সময় বিএনপির প্যানেল থেকে নির্বাচিত বার সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল লিখিত বক্তব্যে বলেন, কোনো প্রধান বিচারপতির বিদায় অনুষ্ঠানের কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ও সদস্যদের অংশগ্রহণ বিষয়ে সমিতির সভাপতি বা সম্পাদককে অবহিত করা হয়ে থাকে, এটাই রেওয়াজ। একই সঙ্গে সমিতির সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। পাঠানো হয় প্রধান বিচারপতির জীবনবৃত্তান্ত।

এ ছাড়া সদস্যদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে সমিতির পক্ষ থেকেও অবহিত করে তাদের যোগদানের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু প্রধান বিচারপতির বিদায় অনুষ্ঠান বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর, সমিতিকে অবহিত করা হয়নি। সমিতির প্রত্যেক সদস্যের জন্য এটি চরম অবজ্ঞার শামিল। যদিও পরবর্তীতে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়, কিন্তু আমাদের করণীয় কী বা সদস্যদের আমন্ত্রণের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংবাদ সম্মেলন

বার সম্পাদক বলেন, আমরা চেয়েছিলাম আজ বিদায় অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রধান বিচারপতির কার্যকালে তার সফলতা ও ব্যর্থতা এবং সমিতির সদস্যদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি বিষয়ে আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে। অনুরোধ জানাতে চেয়েছিলাম যাতে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপ্রার্থী মানুষের দুর্দশা, হাইকোর্ট প্রদত্ত জামিনাদেশ ও অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের অহরহ স্থগিতাদেশের কারণে সৃষ্ট মামলা জট ও বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি, ঘুষ-দুর্নীতি-অনিয়ম, সমিতির অভ্যন্তরে স্থাপিত সুপ্রিম কোর্টের স্টাফদের জন্য অস্থায়ী টিনশেড উচ্ছেদ, সমিতির সদস্যদের পেশাগত মানোন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং সমিতির নির্মাণাধীন ভবন-২০২০ এর ওপর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু সেই সুযোগ থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে, যা দুর্ভাগ্যজনক। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।

এর আগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বিদায় সংবর্ধনা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আওয়ামী প্যানেল থেকে নির্বাচিত সহ-সভাপতি মুহা. শফিক উল্লাহ। সবশেষে বিদায়ী বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।