জলবিদ্যুতের ফাঁদে নিশ্চিহ্নের পথে বাঘ-জাগুয়ার
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মানুষের চাহিদার প্রেক্ষিতেই বিশ্বজুড়ে বাড়ছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। এতে ধ্বংস হচ্ছে বাঘ ও জাগুয়ারের মতো প্রাণীদের বসতি। ফলে আশঙ্কাজনক হারে কমে আসছে এসব প্রাণীর সংখ্যা। স্বাভাবিক অবস্থানে থাকা প্রাণীগুলো চলে যাচ্ছে বিপন্ন প্রাণীদের কাতারে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বাঘের স্বাভাবিক বিচরণ
গবেষকদের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবিদ্যুতের জন্য বাঁধ নির্মাণের ফলে বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলোতেই মোট বাঘের সংখ্যার এক পঞ্চমাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার কোনো কোনো দেশের বনে বাঘ পুরোপুরি নিশ্চিহ্নের খাতায় চলে যাচ্ছে।
এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা হলে বিশাল এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এতে পাঁচটি বাঘের অন্তত একটি তার আবাসস্থান হারায়। আবার বিশাল বন পানিতে ডুবে যাওয়ায় স্বাভাবিক বনভূমি পরিণত হয় ছোট ছোট দ্বীপে, যা বাঘ ও জাগুয়ারের মতো প্রাণীদের স্বাভাবিক জীবন ধারণের জন্য উপযোগী নয়। ফলে তারা সেসব স্থান থেকে চলে যাচ্ছে।
জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ব্রাজিলের বালবিনায় বন হয়ে গেছে জলাভূমি
গবেষকরা জলবিদ্যুতের সাথে সম্পর্কিত আরেকটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন। সেটি হচ্ছে, কোনো স্থানে জলবিদ্যুৎ স্থাপন করা হলে সেখানে বাস্তবতার খাতিরেই অনেক বেশি রাস্তাঘাট তৈরি করতে হয়। এর ফলেও বনের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বনের অখণ্ডতা নষ্ট হচ্ছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে বাঘ ও জাগুয়ারের মতো প্রাণীদের ওপর।
এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, আধুনিক বিশ্ব বাঘের সাথে নির্মম আচরণ করেছে। গত ১০০ বছরে বাঘের ৯০ শতাংশ আবাসভূমিই ধ্বংস হয়েছে। ফলে কমছে বাঘের সংখ্যা। সারা বিশ্বে এখন বাঘের মোট সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারে এসে ঠেকেছে।
অভিন্ন পরিস্থিতি জাগুয়ারের বেলাতেও। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে শুরু করে আর্জেন্টিনা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় বসবাস করত জাগুয়ার। কিন্তু জলবিদ্যুৎ নামের অভিশাপে তাদের সংখ্যা কমে এখন অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে গবেষক অ্যানা ফিলিপা পামেরিম বলেন, বিশ্বজুড়ে অন্তত ১০০টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাঘ ও জাগুয়ারের বিচরণক্ষেত্রগুলোকে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে। কোথাও বা হাজার হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের সময় রাস্তাঘাট তৈরি করতে হয়। এর ফলে যেসব অরণ্য অখণ্ড ছিল তা কেটে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। এসব কারণে স্বাভাবিক পরিবেশ হারিয়েছে বনের রাজা খ্যাত বাঘ, জাগুয়ারসহ অন্যান্য প্রাণী।
চীনের শেনজেনে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষক ড. লুক গিবসন বলেন, এসব বাঁধ বা জলাধার নির্মাণ করা না হলে বাঘের সংখ্যা এখনকার চেয়ে অন্তত ২০ শতাংশ বেশি থাকতো।
এ অবস্থায় গবেষকরা প্রশ্ন তুলেছেন, যে উন্নতির আশায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বসানো হচ্ছে, তা কি পরিবেশের এসব ক্ষতিকেও ছাপিয়ে যেতে পারবে? এ অবস্থায় আরো বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই ভূমি পরিকল্পনাকারী, জ্বালানি উৎপাদক এবং প্রকৌশলীদের সাথে নিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণকারীদের কাজ শুরু করতে হবে। আর তা না হলে এসব প্রাণী হয়ত পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.